ভোলে বাবার ‘সৎসঙ্গ’ স্থল যেন মৃত্যুপুরী! হাহাকার মর্গের বাইরে

স্বঘোষিত ধর্মগুরুর একটা ডাক আর ‘সৎসঙ্গে’ ২ লক্ষের ভিড়! তারপরই অঘটন। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২১ জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কারণ এখনও বহু মানুষের খোঁজ মিলছে না।

July 4, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্বঘোষিত ধর্মগুরুর একটা ডাক আর ‘সৎসঙ্গে’ ২ লক্ষের ভিড়! তারপরই অঘটন। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২১ জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কারণ এখনও বহু মানুষের খোঁজ মিলছে না।

৯১ নম্বর জাতীয় সড়ক। উত্তরপ্রদেশে শিরাউ থেকে এটার সংযোগকারী সড়ক। তার গা বেয়েই ফুলারি গ্রামের দিকে নেমে গিয়েছে কাদামাখা রাস্তা। কিছুটা এগিয়ে সাদা তোরণ। তাতে টাঙানো ‘ভোলেবাবা’র ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ঢাউস বিজ্ঞাপন। যতদূরে দেখা যায়, অস্থায়ী ছাউনির জন্য বাঁধা বাঁশের সারি। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই এই জায়গা হয়ে উঠেছিল মৃত্যুপুরী। ‘বাবা’র পদধূলি নিতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে প্রাণ হারিয়েছে ১২১ জন। তাদের মধ্যে মহিলা ও শিশুর সংখ্যা ১১০-এর বেশি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা চটি-জুতো, ব্যাগ, প্লাস্টিক, ছেঁড়া-জামাকাপড় বয়ে বেড়াচ্ছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার চিহ্ন। টানা বৃষ্টিও মুছতে পারেনি মঙ্গলবারের ক্ষত। সরকারি হিসেবে, মৃতের সংখ্যা ১২১। জখম আরও ২৮। এখনও খোঁজ নেই কয়েক জনের। তাঁদের হদিশ পেতে পরিবারের লোকজন হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তোরণের আশপাশে।

স্বঘোষিত ধর্মগুরুর ভক্ত ছিলেন না কোনও দিন। কিন্তু হঠাৎ সৎসঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা জাগল তাঁর। তার পর আর খোঁজ মেলেনি তাঁর। বাবাকে খুঁজতে ঘটনাস্থলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন দুই পুত্র। মঙ্গলবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃত্যুর ছায়া ঘিরে ফেলেছে উত্তরপ্রদেশের হাথরসকে। হাসপাতালে থরে থরে পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। বরফের আস্তরণ দিয়ে ঢেকে রাখা রয়েছে দেহগুলি। চারদিকে কান্নার আওয়াজ। প্রিয়জনদের হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন অনেকে।

কিন্তু, কীভাবে ঘটল এমন মর্মান্তিক ঘটনা? প্রশাসনিক গাফিলতি নাকি অন্য কিছু? প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের পর নানা তত্ত্ব ঘোরাফেরা করছে বিভিন্ন মহলে। প্রাথমিক তদন্তের পর ঘটনার টাইমলাইন প্রকাশ করেছেন হাতরাসের মহাকুমাশাসক সিকান্দ্রা রাও। চিঠি আকারে তা পাঠিয়েছেন হাতরাসের জেলাশাসককে। সেখানে সিকান্দ্রা জানিয়েছেন, সৎসঙ্গে বক্তব্য শেষ করে মঙ্গলবার বেলা ১ টা ৪০ মিনিট নাগাদ প্যান্ডেল থেকে এটা যাওয়ার জন্য বেরোচ্ছিলেন ভোলেবাবা। মূল প্যান্ডেলের বাইরে রাস্তার দু’ধারে তখন পুরুষ, মহিলা, শিশু নির্বিশেষে ভক্তদের ভিড়। সকলেই তাঁর পায়ের ধূলো নিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আগে থেকেই অনেকে অপেক্ষা করছিলেন। পিছন থেকে অনেকে ‘বাবা’র গাড়ির দিকে ছুটে আসেন। তাদের বাধা দেয় ভোলেবাবার নিরাপত্তারক্ষী ও সেবাদাররা। ধাক্কাধাক্কিতে কয়েকজন নীচে পড়ে যান। তারপরও অন্যারা থামেননি। পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। অনেকে দৌড়ে রাস্তার উল্টোদিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, মাঠ থেকে রাস্তায় ওঠার পথ বেশ কিছুটা ঢালু হওয়ায় অনেকে সেখানে পড়ে গিয়েও পদপিষ্ট হন। মৃতদের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের ১ জন ও হরিয়ানার ৪জন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen