সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারিয়েও সংসদ চত্বরের মাহাত্ম্য-ইতিহাস মুছতে মরিয়া মোদী সরকার
সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা খোলা থাকবে কাউন্টার। বানানো হবে সাংসদদের কার্ড। লেখা হবে তাঁদের নাম, ঠিকানা, পরিচয়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশবিশেষ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দেশের সংসদ চত্বরের মাহাত্ম্য, ইতিহাস মুছতে মরিয়া ‘সংখ্যালঘু’ মোদী সরকার। এতদিন নতুন সাংসদের জন্য সংসদ ভবনের দোতলার কমিটি রুমেই হতো আপ্যায়ন সহ ‘ফেসিলিটেশন সেন্টার।’ কিন্তু এবার পুরনো ভবনটি পরিণত সংবিধান সদনে। তাই সংসদের লাগোয়া অ্যানেক্স ভবনে করা হয়েছে সেই ব্যবস্থা। ১৪ জুন পর্যন্ত সেখানেই চলবে অষ্টাদশ লোকসভার সাংসদদের যাবতীয় নথিপত্রের কাজ। সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা খোলা থাকবে কাউন্টার। বানানো হবে সাংসদদের কার্ড। লেখা হবে তাঁদের নাম, ঠিকানা, পরিচয়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশবিশেষ।
কিন্তু এবার যাঁরা প্রবেশ করবেন সংসদ ভবনে, তাঁদের আর চোখে পড়বে না মহাত্মা গান্ধী বা বি আর আম্বেদকরের মূর্তি। সেই মূর্তি সরিয়ে বসানো হচ্ছে গাছ। অর্থাৎ, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও ইতিহাস মুছে দিতে বা বিরোধীদের প্রতিবাদ ম্লান করে দিতে তৎপর নরেন্দ্র মোদী। তাই চোখের আড়ালে পাঠিয়ে দেওয়া হল সংবিধান প্রণেতা বি আর আম্বেদকরের মূর্তি। নেই ছত্রপতি শিবাজি, জওহরলাল নেহরু, বীরসা মুণ্ডা, দেবী লালের মূর্তিও।
গান্ধীজির ব্রোঞ্জের মূর্তিটি সংসদ চত্বরে বসানো হয়েছিল ৩১ বছর আগে। ১৬ ফুট উঁচু এই মূর্তি ভারতীয় সংসদের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সংসদ ভবন চত্বরে যাবতীয় বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত হতো জাতির জনকের মূর্তির সামনে। সেই মূর্তি সরিয়ে ফেলা মানে এতদিনের চেনা প্রতিবাদের ছবি হারিয়ে যাবে সংসদ চত্বর থেকে। বাঁ হাতে সংবিধান আর ডান হাতের তর্জনী তোলা আম্বেদকরের মূর্তি বসেছিল ৫৭ বছর আগে। উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন। জওহরলাল নেহরুর মূর্তি বসানো হয়েছিল ৬১ বছর আগে। ১৮ ফুটের ছত্রপতি শিবাজি ২০০৩ সালে। এই ধরনের ১৪টি মূর্তির মুখ সবই ছিল পুরনো সংসদ ভবনের দিকে। মোদির সরকার তৈরি করেছে নতুন ত্রিকোণাকৃতি সংসদ ভবন। তাই প্রস্তাব ছিল নতুন ভবনের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে মূর্তির মুখ। কিন্তু সেই প্রস্তাব আপাতত কার্যকর না করে সংসদ চত্বর সম্পূর্ণ ফাঁকাই করে দেওয়া হল।