বাজারে জাল স্যানিটাইজার, রাজ্যজুড়ে পুলিসি অভিযান

রাজ্য ছেয়ে গিয়েছে ভেজাল স্যানিটাইজারে। আসলের সঙ্গে নকলের ফারাক বোঝাই দায়। ঠকছেন সাধারণ মানুষ।

June 14, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কোভিড-বধে এখন মোক্ষম দাওয়াই স্যানিটাইজার। ফলে চাহিদার লেখচিত্র ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। রাজ্য ছেয়ে গিয়েছে ভেজাল স্যানিটাইজারে। আসলের সঙ্গে নকলের ফারাক বোঝাই দায়। ঠকছেন সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, নকল স্যানিটাইজার ব্যবহারে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন চিকিৎসকরা। ভেজাল স্যানিটাইজারের ব্যবসা রুখতে এখন কড়া নজরদারি চালাচ্ছে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিসের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি)। ইতিমধ্যেই কলকাতা সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি এলাকায় হানা দিয়ে প্রায় তিন হাজার লিটার ভেজাল স্যানিটাইজার বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। তবে শনিবার পযর্ন্ত গ্রেপ্তারের কোনও খবর নেই।
করোনা সংক্রমণের পর থেকেই বেড়েছে স্যানিটাইজারের ব্যবহার। নির্দিষ্ট সময় অন্তর হাত জীবাণুমুক্ত করতে সাবান কিংবা স্যানিটাইজারের কথা বারবার বলছেন চিকিৎসকরা। সে ক্ষেত্রে স্যানিটাইজারে ৭২ শতাংশ অ্যালকোহল থাকা বাধ্যতামূলক। মারণ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে বাজারে অমিল ছিল স্যানিটাইজার। ওষুধের দোকান তো বটেই, স্টেশনারি দোকান থেকেও হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছিল ক্রেতাদের। পরে বিভিন্ন নামজাদা সংস্থা যেমন স্যানিটাইজার উৎপাদনে জোর দেয়, তেমন‌ই স্থানীয়ভাবে ছোটখাট সংস্থাগুলিও এই জীবাণুমুক্তির উপকরণ তৈরি করছে। সব প্রস্তুতিকারক সংস্থারই দাবি, তাদের স্যানিটাইজারে সঠিক পরিমাণে অ্যালকোহল রয়েছে। কেউ কেউ আবার ৯০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে বলেও প্রচার চালাচ্ছে।

কিন্তু, বাজারের সব স্যানিটাইজারে কি সত্যি ৭২ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে? পুলিসের তথ্য বলছে, ‘একেবারেই নয়।’ এমনকী ল্যাবরেটরির রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, বাজারে বিক্রি হওয়া অনেক স্যানিটাইজারেই ৭২ শতাংশ অ্যালকোহল নেই। এমনকী ন্যূনতম পরিমাণটাও নজরে আসছে না। ক’দিন আগে বেলেঘাটা থানা এলাকায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে বিপুল পরিমাণ স্যানিটাইজার। যা পুরোপুরি ভেজাল বলেই ইবি’র প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

বেলেঘাটা ছাড়াও বারাকপুর, দুর্গাপুর-আসানসোল কমিশনারেট, পুরুলিয়া, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারসহ অন্যান্য জায়গা থেকেও নকল স্যানিটাইজার বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। আর এগুলির কোনটাই নামী কোম্পানির নয়। জার ভর্তি এই নকল স্যানিটাইজার তৈরি হচ্ছে স্থানীয়ভাবে। তদন্তকারীদের কথায়, সমস্যাটা নামীদামি কোম্পানিকে নিয়ে নয়। বিভিন্ন মহল্লায় বা ছোট কারখানায় যে স্যানিটাইজার তৈরি হচ্ছে, তাতে কোনও সুরক্ষা বিধি মানা হচ্ছে না। অ্যালকোহল নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকছে না। সামান্য অ্যালকোহলের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে জল ও স্পিরিট। তার সঙ্গে অ্যালকোহলের এসেন্স। জার ভর্তি করে এই ভেজাল স্যা঩নিটাইজার যাচ্ছে বিভিন্ন বাজারে। করোনা আতঙ্কের আবহে সেটাই কিনছেন সাধারণ মানুষ। তাতে চিন্তা বাড়ছে ইবি আধিকারিকদের। ঘরে ঘরে তৈরি করা স্যানিটাইজার পদ্ধতি মেনে হচ্ছে কি না, তা নিয়েও খোঁজখবর শুরু করেছে ইবি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen