দীঘায় পর্যটকদের র‌্যাপিড টেস্টের দায় হোটেলগুলির ওপর ছাড়ল প্রশাসন

কেউ কেউ হোটেলে উঠে যান। গত ১৬জুলাই ব্লক প্রশাসন এবং দীঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিস দীঘা বাইপাসে নাকা চেকিং করে ডবল ডোজ কিংবা করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ছাড়া পর্যটকদের রাস্তা থেকেই ফিরিয়ে দেয়।

July 20, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

পর্যটকদের করোনা পরীক্ষার জন্য দীঘায় (Digha) হোটেল মালিকদের র‌্যাপিড টেস্টের কিট (Rapid test kits) কেনার পরামর্শ দিচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। অনেকেই করোনার দু’টি ডোজ না নিয়ে এবং কোভিড টেস্ট না করিয়েই দীঘায় আসছেন। সেই সব পর্যটক হোটেলেই টেস্ট করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে হোটেল মালিকদের র‌্যাপিড টেস্টের কিট সংগ্রহ করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনকে এমনই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে দীঘায় আগত প্রত্যেক পর্যটকের টেস্ট করা সম্ভব নয় বলে জেলা প্রশাসন পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই কাঁথির মহকুমা শাসক আদিত্যবিক্রম হিরানি দীঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর ও মন্দারমণির হোটেল, লজে পর্যটকদের থাকার জন্য ভ্যাকিসিনের দু’টি ডোজের সার্টিফিকেট কিংবা করোনা (Covid19) পরীক্ষার রিপোর্ট বাধ্যতামূলক বলে নোটিস জারি করেন। ওই নোটিস প্রত্যেক হোটেল ও লজের বিভিন্ন জায়গায় ঝোলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নোটিস জারির পরও অনেক পর্যটক করোনা পরীক্ষা ছাড়াই দীঘায় চলে আসেন। কেউ কেউ হোটেলে উঠে যান। গত ১৬জুলাই ব্লক প্রশাসন এবং দীঘা মোহনা কোস্টাল থানার পুলিস দীঘা বাইপাসে নাকা চেকিং করে ডবল ডোজ কিংবা করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ছাড়া পর্যটকদের রাস্তা থেকেই ফিরিয়ে দেয়।

গত ১৭ তারিখ জেলাশাসক নিজে দীঘা এবং মন্দারমণির বিভিন্ন হোটেলে অভিযান চালান। প্রায় দু’শো পর্যটককে সমুদ্র সৈকত এবং বিভিন্ন হোটেল থেকে ফেরানো হয়। তাঁদের কারও করোনার দু’টি ভ্যাকসিন নেওয়ার সার্টিফিকেট কিংবা টেস্টের রিপোর্ট ছিল না। সেই সঙ্গে দীঘায় একটি এবং মন্দারমণিতে দু’টি হোটেলের বিরুদ্ধে থানায় কেস করেছে প্রশাসন। কোভিড বিধি ভেঙে অর্ধেকের বেশি রুমে পর্যটক রাখা এবং মহকুমা প্রশাসনের নোটিস হোটেলে না টাঙানোয় শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসনের কড়াকড়িতে দীঘায় পর্যটক সমাগম কমেছে। এর ফলে হোটেল ও লজের মালিকরা বিপাকে পড়েছেন। কারণ, পর্যটক সংখ্যা একেবারে সীমিত। এই অবস্থায় হোটেল মালিকরা বৈঠকে বসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রশাসনের কড়াকড়িতে দীঘায় পর্যটক সংখ্যা কমে গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। তাছাড়া মহামারী এবং সাইক্লোনের জোড়া ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্তেই এই নোটিস হোটেল মালিকদের কাছে জবরদস্ত ধাক্কা বলে তাঁদের দাবি। তাই কাঁথির এসডিও-র জারি করা নোটিস পুনর্বিবেচনার দাবি জানাবেন হোটেল মালিকরা।

সোমবার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকার ভিড়, জমায়েত না করার নির্দেশ দিচ্ছে। দীঘায় পর্যটক সমাগম ভীষণ বেড়েছে। সেই ভিড় থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল। তাই পর্যটক থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ, দোকানদার প্রত্যেকের স্বার্থে আমরা ১২জুলাই ওই নোটিস ইস্যু করেছি। করোনার দু’টি ডোজ না থাকলে সেক্ষেত্রে বাড়ি থেকে টেস্ট করিয়েই দীঘায় আসতে বলছি। আর কেউ দীঘায় এসে টেস্ট করাতে চাইলে সেক্ষেত্রে হোটেল কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের র‌্যাপিড টেস্টের কিট সংগ্রহ করতে হবে।

সোমবার দীঘা প্রায় শুনশান ছিল। সারি সারি হোটেল খোলা থাকলেও পর্যটকদের আসা-যাওয়া নেই। ঠিক লকডাউন পিরিয়ডের ছবি। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, এই মুহূর্তে হোটেলে পর্যটক নেই বললেই চলে। খুব শোচনীয় অবস্থার মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। তবে, করোনা কিট সংগ্রহ করে টেস্টের যে প্রস্তাব প্রশাসন দিয়েছে, তাতে খানিকটা সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen