বেড়েই চলেছে ভোজ্য তেলের দাম, ভ্রুক্ষেপ নেই মোদী সরকারের

প্রতি মাসে ভোজ্য তেলের দর বৃদ্ধির কথা সেভাবে প্রকাশ্যে আসছে না। নীরবে ছ্যাঁকা দিয়ে চলেছে আম-ভারতবাসীকে। ফলে, হেঁশেল সামলাতে এখন গরিব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তের প্রাণ ওষ্ঠাগত।

October 10, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

দর-দৌড়ে ভোজ্য তেলও কম যাচ্ছে না! নিত্যদিন বাড়ছে পেট্রল, ডিজেলের দাম। তার সঙ্গে প্রায় সমানে টেক্কা দিচ্ছে সর্ষে-সূর্যমুখী কিংবা বাদাম-বনস্পতি অথবা সোয়াবিন তেল। ফারাক শুধু একটাই, পেট্রল-ডিজেলের দর নজরে পড়ছে। আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু প্রতি মাসে ভোজ্য তেলের দর বৃদ্ধির কথা সেভাবে প্রকাশ্যে আসছে না। নীরবে ছ্যাঁকা দিয়ে চলেছে আম-ভারতবাসীকে। ফলে, হেঁশেল সামলাতে এখন গরিব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তের প্রাণ ওষ্ঠাগত। তাতে অবশ্য হুঁশ নেই ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ সরকারের! উল্টে সাফাই—‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দর চড়া হলে কী-ই বা করতে পারে সরকার? তা ছাড়া সর্ষেতেল বাদে তো খুব একটা বেশি হারে বাড়ছে না অন্যান্য তেলের দাম।’ যা শুনে বাজার বিশেষজ্ঞদের কটাক্ষ, ‘মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’ স্লোগানের এটাই বড় প্রহসন!

গত এক বছরে খুচরো বাজারে প্রতিটি ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে। সবার শীর্ষে সর্ষেতেল। শুক্রবার দেশের ২২টি শহরে এই তেল বিক্রি হয়েছে লিটার পিছু ১৮৫ টাকা ১৫ পয়সা দরে। কোথাও কোথাও এই দর ছুঁয়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। কেন্দ্রের ক্রেতা, খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের তথ্য বলছে, এক বছরে সর্ষেতেলের দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৪৩.৩১ শতাংশ। ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর সর্ষেতেলের এক লিটার বিক্রি হয়েছে ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে। প্রায় প্রতি মাসে বাড়তে বাড়তে সেটা এখন দু’শোর ঘরে। গত এক মাসের মধ্যে বেড়েছে প্রায় তিন টাকা।

সর্ষেতেলের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিচ্ছে সোয়াবিন তেল। এক বছরে দাম বেড়েছে ৪৬.৭২ শতাংশ। গত বছর এই সময়ে লিটারপিছু দর ছিল ১০৫ টাকা ৬৪ পয়সা। সেটা এখন হয়েছে ১৫৫ টাকা। সূর্যমুখী তেল ১২২ টাকা ৫১ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭২ টাকা ৪৬ পয়সা। বৃদ্ধির হার প্রায় ৩৮ শতাংশ। প্রায় একই হারে বেড়েছে পাম অয়েলও। ছিল ৯৫ টাকা ৬৮ পয়সা। হয়েছে ১৩২ টাকা ৯১ পয়সা। বনস্পতির দরবৃদ্ধির হারও ৪৩.৩ শতাংশ। ৯৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৬.৫৯ পয়সায়। দরের প্রতিযোগিতায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে বাদাম তেল। বৃদ্ধির হার ১৯.৫৭ শতাংশ।

কিন্তু কেন এই অগ্নিমূল্য ভোজ্য তেলের? কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ভারতে ভোজ্য তেলের মোট চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ আসে বাইরের দেশ থেকে। বিশ্ববাজারে প্রতিটি তেলেরই দাম বেড়েছে। তারই প্রভাব পড়ছে ভারতে। এখন সরকার আমদানি শুল্ক কিছুটা হ্রাস করেছে। সর্ষেতেল ছাড়া অন্যান্য তেলের দামও কমতে শুরু করেছে। তবে, সহসা সর্ষেতেলের দর কমানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলে ইঙ্গিত দিয়েছে মন্ত্রকের একটি সূত্র। বলা হয়েছে, এই তেলটি পুরো দেশীয়। ফলে, কাঁচামাল সর্ষে উৎপাদনের উপর নির্ভর করে দামের ওঠানামা। সেই অস্থিরতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। কীভাবে তা করা হবে, তার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen