‘পশ্চিমবঙ্গে মোদির নামে নির্বাচন লড়বে বিজেপি’ – এক্সক্লুসিভ তথাগত রায়

বাংলার মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে বিজেপির অন্যতম মুখ তথাগত রায়। মুখোমুখি হলেন দৃষ্টিভঙ্গির।

September 8, 2020 | 3 min read
Published by: Drishti Bhongi

তথাগত রায়। বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। সদ্য মেঘালয়ের রাজ্যপালের দায়িত্বে অব্যাহতি দিয়ে ফিরেছেন বাংলায়। সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে চান। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে বিজেপির অন্যতম মুখ তথাগত রায়। মুখোমুখি হলেন দৃষ্টিভঙ্গির। রইল সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার।

প্রশ্নঃ রাজ্যের রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে ফিরে আসার পরিকল্পনা কি?

তথাগত: পরিকল্পনা খুবই সরল। প্রথমে সদস্য হতে হবে। আমার সাধারণ সদস্যপদ হয়ে গেছে। এখন সক্রিয় সদস্য হতে হবে। সর্বভারতীয় নেতাদের সাথে কথা বলতে হবে। আমি দিল্লী যাব। এর মধ্যে কলকাতায় যারা আছেন যেমন, দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয় বর্গী, এদের সঙ্গে আমি দেখা করেছি কথা বলেছি। দিল্লীর অন্যান্য নেতা যারা রয়েছেন যেমন বাবুল সুপ্রিয়, স্বপন দাসগুপ্ত এদের সাথে ফোনে কথা বলেছি। মুকুল রায়ের সাথে দেখা করেছি কথা বলেছি। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আমি আস্তে আস্তে ঢুকবো পার্টিতে। 

প্রশ্নঃ রাজনীতিতে আগ্রহীরা বলছেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির মুখ তথাগত রায়। কারণ তারা দিলীপ ঘোষকে এগিয়ে রাখছেন না। কি বলবেন?

তথাগত: এ নিয়ে আমি কিছুই বলব না। কারণ কৈলাশ বিজয়বর্গী খুব পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন, আমরা কোন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে নির্বাচনে যাব না। আমরা নির্বাচনে দলের নাম নিয়ে যাব। অবশ্যই মোদীজির নাম নিয়ে যাব। পশ্চিমবঙ্গের কোন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে যাব না। এইটাই বর্তমানে দলের অবস্থান। 

প্রশ্নঃ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই রাজ্যের ফলাফল কোনদিকে যেতে পারে বলে আপনি মনে করছেন?

তথাগত: নিঃসন্দেহে বিজেপি জিতবে। বিজেপি তৃণমূলকে উৎখাত করে জিতবে। মানুষের মধ্যে তৃণমূলের প্রতি যে প্রচন্ড ঘৃণা, প্রচণ্ড অভিযোগ জমা হয়েছে, যার কোনরকম সুরাহা হচ্ছে না। সেটাই আমাদের জিতিয়ে দেবে। আমাদের নিজেদের যে রাজনৈতিক কার্যকলাপগুলি আছে, সেগুলো চালিয়ে যেতে হবে। ওদের যে খামতিগুলো আছে, ওদের যে পদস্খলন হয়েছে সেগুলো মানুষের চোখে আনতে হবে।

প্রশ্নঃ কোনটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? আপনাদের ভালো দিকগুলোকে নাকি তৃণমূলের খারাপ দিকগুলোকে?

তথাগত: দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূলের নেগেটিভ পয়েন্টগুলো আজকে একটা বিশাল আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে তৃণমূল যেরকম ধরনের দুর্নীতি করেছে। আম্ফানে তো করেইছে, বিভিন্ন ত্রানেও। দুর্নীতিতে ছেয়ে আছে দলটা। যে দলের নেত্রীকে একসময় বলা হত শততার প্রতিমূর্তি, এখন তারাও বলা বন্ধ করে দিয়েছে। 

এছাড়া নির্লজ্জ মুসলমান তোষণ, যেটা তৃণমূলের মার্কামারা হয়ে গেছে। এই মুসলমান তোষণে মানুষ অত্যন্ত ব্যাথিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে, রাজ্যে কোন চাকরি নেই, নতুন ব্যবসা আসছে না, এই জিনিসগুলো মানুষের চোখের সামনে রয়েছে। 

ভারতবর্ষের একটি মাত্র রাজ্য যার মুখ্যমন্ত্রী যিনি শিল্প তাড়িয়ে আত্মপ্রসাদ অনুভব করেছেন। অন্য মুখ্যমন্ত্রীরা চেষ্টা করেন শিল্প টেনে আনতে। ইনি শিল্প তাড়িয়ে আনন্দ করেছেন, নির্বাচনে জিতেছেন। সবদিক দিয়েই রাজ্য পিছিয়ে আছে। তাছাড়া প্রশাসনে দলবাজি করেছেন। 

তাই আমি বলি মমতা বন্দোপাধ্যায় সিপিএমের মেধাবী ছাত্রী। যেভাবে এরা পুলিশ, প্রশাসনের রাজনীতিকরণ করেছেন, মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয় নি। এসবে মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। তাছাড়া আমাদের যেসব এজেন্ডা আছে সেগুলোকে নিয়ে যেতে হবে। যে জিনিসগুলো করেছে সেগুলো মানুষের চোখের সামনে রাখতে হবে। 

প্রশ্নঃ আপনি তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে এতো কথা বললেন, আপনার সহোদর সৌগত রায় তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ। তাঁর বিষয়ে মূল্যায়ন কি?

তথাগত: তাঁর জন্যে আলাদা করে কোন মূল্যায়ন নেই। সহোদর তো বাড়িতে। রাজনীতির ক্ষেত্রে সহোদরের আলাদা কোন দাম নেই। রাজনীতির ক্ষেত্রে উনি এক ভ্রান্ত পথের পথিক। বাড়িতে সহোদর। বাড়িতে অত্যন্ত স্নেহের ছোট ভাই। রাজনীতির ক্ষেত্রে অন্য জিনিস।

প্রশ্নঃ আপনাদের খাওয়ার টেবিলে গল্প হয়? রাজনীতি নিয়ে কথা হয় নাকি ছোট বেলার গল্প হয়?

তথাগত: আমরা এক বাড়িতে থাকি না। ও থাকে আমাদের পৈত্রিক বাড়িতে লেক গার্ডেনসে থাকে। আমি থাকি আমার বাড়ি লেক রোডে। এছাড়া আমি যা শুনেছি ও বেশিরভাগ সময়ে, দমদমে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে থাকে। অতয়েব দেখা হবে কোথা থেকে? তাছাড়া লোকসভার অধিবেশনের সময় দিল্লীতে থাকে। বছরে হয়তো দুতিনদিন দেখা হয়। তারমধ্যে সাধারণত  রাজনীতি বাদ দিয়েই কথাবার্তা হয়। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen