বিশ্ব রেকর্ড’ গড়তে ভুয়ো টিকা প্রদান মধ্যপ্রদেশে?
একই রকম ভাবে আরেক ব্যক্তি চৈনেন্দ্র পান্ডে ৫ মিনিটের ব্যবধানে ৩ জনের নামে মেসেজ পেয়েছেন।

বয়স মাত্র ১৩, তাতেই করোনার টিকা (Covid Vaccine) পেয়ে গেল মধ্যপ্রদেশের নাবালক। অন্তত এমনটাই বলছে কো-উইন (CoWin) থেকে আসা মেসেজ। কিন্তু দেশে ১৮ বছরের কমবয়সীদের টিকাকরণ তো শুরুই হয়নি। তাহলে বছর ১৩-এর বেদান্ত ডাংরে কী করে টিকা পেল? সে কথাই ভাবছেন বাবা রজত ডাংরে। গত সোমবার ৭টা ২৭ মিনিটে তাঁর মোবাইলে মেসেজ এসেছে, যেখানে লেখা রয়েছে বিশেষভাবে সক্ষম তাঁর ১৩ বছরের ছেলে করোনা টিকার প্রথম ডোজ় পেয়েছে।
বাবা রজত ডাংরে জানান, কয়েকদিন আগে বিশেষভাবে সক্ষম ছেলের জন্য তিনি কর্পোরেশনে ভাতার আবেদন করেছিলেন, সেই নথি টিকার সার্টিফিকেটে ব্যবহৃত হয়েছে। বেদান্ত ডাংরে যেদিন টিকা পেয়েছেন বলে টিকাকরণের সার্টিফিকেটে দাবি করা হয়েছে, সে দিনই ১৭ লক্ষ ৪২ হাজার টিকাকরণের রেকর্ড গড়েছিল মধ্য প্রদেশ সরকার (Madhya Pradesh Govt)।
একই রকম ভাবে আরেক ব্যক্তি চৈনেন্দ্র পান্ডে ৫ মিনিটের ব্যবধানে ৩ জনের নামে মেসেজ পেয়েছেন। যেখানে বলা রয়েছে কতিক্রম, কালিন্দ্রি ও চন্দন টিকা পেয়েছে। কিন্তু চৈনেন্দ্র না এদের চেনেন, না নিজে টিকা পেয়েছেন। বেদান্তের মত একই মেসেজ পেয়েছেন ৪৬ বছর বয়সী নুঝত সালিমও। তিনি টিকা না পেয়েও মেসেজ পেয়েছেন ভ্যাকসিনেশনের। প্রেম পান্ডা নামে আরেক ব্যক্তির সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। তিনি স্লট বুক করেও টিকা নিতে যাননি। কিন্তু তাঁর কাছেও চলে এসেছে সার্টিফিকেট।
সরকারপক্ষ অবশ্য এই চরম বেনিয়মের অভিযোগ মানতে নারাজ। মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সরং এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, এমনটা তিনি প্রথমবার শুনছেন। এমন হয়েছে বলে জানেন না।
বিরোধী দলগুলি যদিও দাবি করছে মিথ্যে বিশ্ব রেকর্ড গড়তেই এই ভুয়ো মেসেজ (Fake Message) পাঠানো হয়েছিল। যাতে কম মানুষকে টিকা দিয়েও সর্বোচ্চের রেকর্ড গড়া যায়।
কংগ্রেসের মুখপাত্র নরেন্দ্র সালুজা বলেন, ‘রোজ টিকা দেওয়ার নতুন নতুন পরিসংখ্যান সামনে আসছে। ১৩ বছরের শিশু থেকে মৃত ব্যক্তি সবাইকেই টিকা দেওয়া হচ্ছে। ৪৭ টি গ্রাম এখনও টিকা পায়নি। এই রেকর্ড আর কিছুই নয় বরং পিআর গিমিক।’
প্রসঙ্গত, ২১ জুন মধ্যপ্রদেশ সরকার দাবি করেছিল একদিনে ১৭.৪২ লক্ষ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ২৩ জুন ১১.৪৩ লক্ষ, ২৪ জুন ৭.০৫ লক্ষ এবং ২৬ জুন ৯.৬৫ লক্ষ মানুষের টিকা পেয়েছেন।
প্রায় এক দিনেই পরিসংখ্যানে এসেছিল এই আকাশ পাতাল পরিবর্তন। যেখানে ২০ জুন ওই রাজ্যে টিকা দেওয়া হয়েছিল ৪,০৯৮ জনকে। ১৯ জুন টিকা দেওয়া হয়েছিল ২৪,৭০০ জনকে। ১৮ জুন ১১,৭৪২ জনকে।
স্বভাবতই একদিনে পরিসংখ্যানের এই বিপুল পরিবর্তনে ভ্রু কুঁচকেছিলেন অনেকেই। আর এখন তার রহস্য সামনে আসছে।