বাংলাকে বাঁচিয়েছেন এবার দেশকে বাঁচান, মমতাকে আর্জি কৃষক মোর্চার

প্রসঙ্গত, যে তিন কৃষি আইন নিয়ে লাগাতার কৃষক আন্দোলন চলছে তাতে তৃণমূল কংগ্রেস আগেই সমর্থন জানিয়েছিল।

June 9, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বাংলার ভোটে ২০০ পার করে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারটা শুরু হয়েছিল। ‘ভারত দিদিকে চাইছে’। বুধবার নবান্নে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে দেখা করে কার্যত সেই আর্জিই জানালেন কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েতরা। এদিন টিকায়েত (rakesh tikait) বলেন, “মমতাজি বাংলাকে বিজেপির হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। এবার দিল্লিতে বিজেপিকে (BJP) হারিয়ে দেশকে বাঁচাতে হবে।”

প্রসঙ্গত, যে তিন কৃষি আইন নিয়ে লাগাতার কৃষক আন্দোলন চলছে তাতে তৃণমূল কংগ্রেস আগেই সমর্থন জানিয়েছিল। ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্রদের মতো সাংসদদের টিম পাঠানো, দিল্লির উপকণ্ঠে কৃষক জমায়েতের উদ্দেশে মমতার টেলিফোন বক্তৃতার পাশাপাশি বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে রাজ্যে ওই তিন কৃষি আইন বাস্তবায়িত হবে না।

এদিন সর্বভারতীয় কিষান সমন্বয় মঞ্চের নেতাদের সামনে মমতাও সেসব প্রসঙ্গের উত্থাপন করেন। সেই সঙ্গে বলেন, ‘গায়ের জোরে আইন পাশ করিয়ে কৃষকদের উপর সব কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যার ফল ভুগছে গোটা দেশ। কৃষিক্ষেত্র, শিল্প কেন্দ্র ভুখা হয়ে পড়েছে।”

এদিন স্মৃতির সরণি বেয়ে ১৪ বছর আগে ফিরে যেতে চাইলেন মমতা। স্মরণ করিয়ে দিলেন, বাংলায় কৃষকের জমি রক্ষার আন্দোলনে তাঁর ঘাম ঝরানোর কথা। সিঙ্গুর আন্দোলনে ২৬ দিন অনশনের কথাও উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “সেই আন্দোলনের ফলে জমি অধিগ্রহণের নীতির ক্ষেত্রে বড়সড় বদল হয়েছিল। কৃষকদের থেকে যাতে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা না করা হয় সে ব্যাপারে বাংলাই মডেল সারা দেশের সামনে।”

বিধানসভা ভোটের আগে রাকেশ টিকায়েত সহ কৃষক নেতারা নন্দীগ্রামে গিয়ে মহা পঞ্চায়েত করেছিলেন। মমতা নন্দীগ্রামে হারলেও বাংলায় বিজেপিকে আটকে দিয়েছে তৃণমূল। এদিন টিকায়েতকে প্রশ্ন করা হয়, আগামী দিনে যে রাজ্যগুলিতে ভোট রয়েছে, সেখানেও কি তাঁরা যাবেন? জবাবে তিনি বলেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চলবে।” সেইসঙ্গে এও বলেছেন, এই কৃষক আন্দোলন শুধুমাত্র কোনও একটি রাজ্য শুধুমাত্র চাষিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বিজেপি বিরোধী আন্দোলন সঞ্চারিত হয়েছে সর্বক্ষেত্রে। মমতাও বলেন, মোদীকে হঠানোই তাঁর এখন লক্ষ্য।

বাংলার ভোটে বিজেপিকে রুখে দেওয়ার পর অনেকেই বলছেন, বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে সারা দেশে মমতা নিজেকে অনেকটা উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের অনেকের মতে, ২০২৪-এর ভোটে মমতাকে কেন্দ্র করেই বিজেপি বিরোধী দলগুলি এক জায়গায় আসতে পারে। যদিও ২০১৯-এর ভোটের আগেও ইউনাইটেড ইন্ডিয়া মঞ্চ গড়ে তেমন আওয়াজ তুলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। তারপর দেখা গিয়েছিল বাংলায় ১৮টি আসন জিতে গিয়েছে বিজেপি। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, একুশের ভোটের পর পরিস্থিতির গুণগত কিছু পার্থক্য ঘটে গিয়েছে। এক, হারানো জমি পুনরুদ্ধার করেছে তৃণমূল। এবং দুই, সমস্ত শক্তি ঢেলে দেওয়ার পরেও বিজেপি বাংলায় তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারেনি। ফলে এবারে মমতার জয়ের মধ্যে অন্য মাহাত্ম্য খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই।

যদিও এদিন রাকেশ টিকায়েতদের নবান্নে আসা নিয়ে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির এক মুখপাত্র বলেন, “ভোটের আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহিরাগত বলছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন জানতে ইচ্ছে করছে, রাকেশ টিকায়েতের বাড়ি বাংলার কোন জেলায়?”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen