পুজোর সময় কি ‘ফ্যাশনেবল’ মাস্ক পরা উচিত?

যাঁদের সার্জিক্যাল মাস্ক নেই, সে ক্ষেত্রে দুটি কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে একই সঙ্গে। বাড়ি এসে সাবান জলে ধুয়ে রোদে কেচে পাঁচ দিন পর আবার ব্যবহার করা যাবে।

October 15, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

করোনার প্রকোপ কমেনি। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। কিন্তু এতে অনেকেরই কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। নিয়ম করে নাক ও মুখ ঢেকে মাস্ক পরছেন না অনেকেই। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে, বাড়ছে সংক্রমণের ভয়। এ দিকে পুজোর সময় বেরলে মুখে মাস্ক পরতে হবে, এটা ভাবলেই বিরক্ত লাগছে সবার।

অনেকেই কেতাদুরস্ত মাস্ক কিনতে শুরু করেছেন অনলাইনে। শাড়ি কিংবা পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে বুটিকে বিক্রি হওয়া হরেক রঙের মাস্ক কিনছেন কেউ। লিপস্টিক পরলে যাতে বোঝা যায়, সেই ভিত্তিতে নানা রকম স্বচ্ছ মাস্কও এসেছে বাজারে। কতটা নিরাপদ এই কেতাদুরস্ত মাস্কগুলি?

মেডিসিনের চিকিৎসকরা বলেন, ‘‘ভাইরাসের ধার কমেনি। সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে রোজ। তাই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সার্জিক্যাল মাস্ক বা ভালভবিহীন এন-৯৫ মাস্ক পরতে পারলে ভাল, নাক-মুখ ঢেকে থাকবে, এমন মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক না পরে রাস্তায় চলাফেরা মানে নিজেকে বিপদে ফেলা এবং অন্যের বিপদ ডেকে আনা। তাই সার্জিক্যাল ত্রিস্তরীয় মাস্ক পরতে হবে। তাতে সংক্রমণ আটকাতে পারে। কিন্তু কেতাদুরস্ত মাস্কে ভাইরাস কতটা আটকায় তার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।’’

কেতাদুরস্ত মাস্ক কি পরা উচিত?

সংক্রামক রোগ চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘মাস্ক বানাতে হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-র মান নির্ধারণ অনুযায়ী। রাস্তাঘাটে বা অনলাইনে বিক্রি হওয়া কোনও কেতাদুরস্ত মাস্ক বা সুতির মাস্ক নয় বরং সারা বিশ্বজুড়ে যে সমস্ত মাস্ক ব্যবহারে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সেই গুণমানের জিনিস ব্যবহার করতে হবে। মানুষকে সংক্রমণ থেকে বাঁচাবার অন্যতম উপায় সঠিক মাস্ক। অস্বীকৃত মাস্ক পরলে তা আরও বেশি বিপজ্জনক। ত্রিস্তরীয় মাস্ক বা সার্জিক্যাল মাস্ক পরতে হবে।’’

কোন মাস্কে কতটা সুরক্ষা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ, সার্জিক্যাল ত্রিস্তরীয় মাস্ক এখন সব থেকে ভাল। যাঁদের বয়স ৬০-এর বেশি বা কোনও জটিল অসুখ বা কো-মর্বিডিটি আছে তাঁরা কখনওই কেতাদুরস্ত মাস্ক বা সুতির মাস্ক ব্যবহার করবেন না। ভিড়ে কখনও যাবেন না। বজায় রাখবেন সামাজিক দূরত্ব।

কেন কেতাদুরস্ত মাস্ক পরা যাবে না?

মাস্কের বাইরের স্তর তৈরি হয় পলিয়েস্টার জাতীয় উপাদানে, মাঝের স্তরে থাকে বুননহীন পলিপ্রপিলিন জাতীয় উপাদান এবং ভিতরের স্তরে সুতি। এ রকম মাস্ক (ভালভবিহীন এন-৯৫) পরলে ৯০ শতাংশ সুরক্ষা পাওয়া যাবে। ত্রিস্তরীয় ডিসপোজেবল সার্জিকাল মাস্কেও এতটাই সুরক্ষা। সিঙ্গল লেয়ার সার্জিকাল মাস্ক দুটো পরলে প্রায় ৯০ শতাংশ সুরক্ষা হয়। কেতাদুরস্ত মাস্কে এ জাতীয় কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি সে অর্থে নেই।

কী কী খেয়াল রাখতে হবে

১) প্রত্যেককে মাস্ক পরতেই হবে

২) মাস্ক হবে ত্রিস্তরীয়

৩) সার্জিক্যাল মাস্কই গ্রহণযোগ্য।

৪) মাস্ক যেখানে সেখানে খোলা যাবে না। খুব প্রয়োজন হলে মাথার পিছনে বা কানের পিছনের অংশ দিয়ে সন্তর্পণে খুলতে হবে।

৫) মাস্কের ভিতরে একেবারেই হাত দেওয়া যাবে না।

৬) যেখানে অনেক লোক রয়েছে বা এরোসল তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে ভালভবিহীন এন-৯৫ পরা বাঞ্ছনীয়।

৭) কাপড়ের মাস্ক পরে খুব একটা লাভ নেই। কেতাদুরস্ত মাস্কে কোনও রকম সুরক্ষা মিলবে না।

৮) সার্জিক্যাল মাস্কের কার্যকারিতা ৮ ঘণ্টার মতো। তাই ব্যবহার করার পর সেটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ফেলে দিতে হবে। এক বারের বেশি কোনওমতেই ব্যবহার করা যাবে না।

৯) যাঁদের সার্জিক্যাল মাস্ক নেই, সে ক্ষেত্রে দুটি কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে একই সঙ্গে। বাড়ি এসে সাবান জলে ধুয়ে রোদে কেচে পাঁচ দিন পর আবার ব্যবহার করা যাবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen