কোচবিহারে শুভেন্দু-মিহিরের অনুগামীরা তৃণমূলেই
এই সূত্রে দুই নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় কোচবিহারে পদ্ম শিবিরের আদৌ কোনও লাভ বা ঘাসফুল শিবিরের কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নন্দীগ্রামের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ও কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কোচবিহারে তাঁদের অনেক অনুগামী রয়েছেন। শুভেন্দুরা যেখানে যাবেন তাঁরাও সেখানেই যাবেন বলে মিহিরবাবুরা নতুন দলে যোগ দেওয়ার আগে দুজনের অনুগামীরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন। ঘাসফুল শিবির ছেড়ে মিহিরবাবু প্রায় এক মাস হল পদ্ম শিবিরে ভিড়েছেন। অন্যদিকে, শনিবার শুভেন্দু বিজেপি শিবিরে যোগ দেন। দুজনের অনুগামীদের কেউই কিন্তু এখনও ঘাসফুল শিবির ছেড়ে বিরোধী শিবিরে যোগ দেননি। এই সূত্রে দুই নেতা বিজেপিতে (BJP) যোগ দেওয়ায় কোচবিহারে পদ্ম শিবিরের আদৌ কোনও লাভ বা ঘাসফুল শিবিরের কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) জেলা সহ সভাপতি গজেন রায় মিহিরবাবুর খুব কাছের লোক ছিলেন। তাঁকে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের কোচবিহার-১ ব্লক সভাপতি করার জন্য মিহিরবাবু রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। তাঁর কথামতো গজেনবাবুকে ব্লক সভাপতি না করার জন্যই তৃণমূলের সঙ্গে মিহিরবাবুর বিরোধ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি দল ছাড়েন। মিহিরবাবু বিজেপিতে যাওয়ায় তিনিও কি সেখানে যাবেন, সোমবার গজেনবাবুকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি তৃণমূলেই থাকব। মিহির গোস্বামী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ওঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। তবে উনি বললে পরে ভেবে দেখব। মিহির গোস্বামীর অনুগামী হিসাবে পরিচিত তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার-১ ব্লকের সহ সভাপতি সিরাজুল হক বলেন, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোক। মিহির গোস্বামীর সঙ্গে আগে সম্পর্ক ভালো থাকলেও তিনি যেহেতু দল পরিবর্তন করেছেন তাই এখন তাঁর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা বিজেপিতে কখনও যাব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যতদিন আছেন আমরাও ততদিন তৃণমূলে থাকব। মিহির গোস্বামীকে রাজনৈতিক গুরু হিসাবে মানা তথা তাঁর অনুগামী হিসাবে পরিচিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক আলিজার রহমান বলেন, মিহির গোস্বামীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তা চিরকাল থাকবে। আমি তাঁকে মেনে চলতাম, এটাও ঠিক। কিন্তু এজন্য আমি দল পরিবর্তন করব তা ঠিক নয়। আমি তৃণমূলের একজন সৈনিক ছিলাম, আছি, থাকব। তৃণমূলের কোচবিহার-১ ব্লকের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি তথা মিহিরের অনুগামী হিসাবে পরিচিত শিশির ঈশোর বলেন, আমি দলত্যাগ করব না। জন্মলগ্ন থেকেই দলটা করি। দলত্যাগ করে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করতে চাই না। আমি তৃণমূলেই থাকব। মিহিরবাবু কী করেছেন সেটা তাঁর ব্যাপার। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর আর ওঁর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখিনি।
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি নীতীশরঞ্জন সরকার সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেকে দাদার (শুভেন্দু) অনুগামী হিসাবে পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি শুভেন্দু যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা তার সঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন। এদিন তিনি বলেন, দাদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো। তবে এখনও দলে আছি। পিকের টিমের বিরুদ্ধে আমার ক্ষোভ রয়েছে। তবে পিকের টিম আমাকে অনেকবার ফোন করেছে। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতিও আমাকে ফোন করেছে। তবে আমি কী করব এখন সিদ্ধান্ত নিইনি। বাকিটা সময়ে ব্যাপার। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সমীর চক্রবর্তী বলেন, আমি দাদার (শুভেন্দু) সঙ্গেই আছি। কোচবিহার জেলা সফরে আমার সঙ্গে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা দাদার সঙ্গে যোগ দেবেন।