শহরের একাংশ ছেয়েছে ব্যঙ্গ-ফেস্টুনে, সহজপাঠ থেকে গোমূত্র কি নেই তাতে!

দিও ফেস্টুনের বয়ান দেখলে অনেকটাই স্পষ্ট, নাগরিক সমাজের আড়ালে আসলে একটি রাজনৈতিক দলই তাদের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে।

January 10, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রাস্তার পাশে পর পর বেশ কিছু ফেস্টুন। কোনওটিতে লেখা— ‘সহজপাঠ রচয়িতা নাকি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’। পাশের ফেস্টুনে স্মাইলি-সহ ব্যঙ্গ করে লেখা, ‘গোমূত্র পান করলে নাকি করোনা মহামারি সেরে যায়।’ ‘গোমূত্রে সোনা আছে’, ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান নাকি শান্তিনিকেতন’— এমন ফেস্টুনেও ছেয়েছে দমদম রোড। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে ফেস্টুন, ব্যানারের লড়াইয়ে রাজনৈতিক লেখনীর এমন অভিনব কৌশল নজর কেড়েছে অনেকেরই।

দমদম রোডে ওই ফেস্টুনগুলির নীচে লেখা ‘নাগরিক সমাজ’ (Nagorik Samaj)। কারা এই নাগরিক সমাজ? কারা দিচ্ছে এমন ফেস্টুন? তা এখনও সামনে আসেনি। এলাকার কোনও বাসিন্দাই এর কোনও সদুত্তর দেননি। যদিও ফেস্টুনের বয়ান দেখলে অনেকটাই স্পষ্ট, নাগরিক সমাজের আড়ালে আসলে একটি রাজনৈতিক দলই তাদের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে। তবে চড়া সুরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির একে অপরকে আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণের মধ্যে দমদম রোডে কিঞ্চিৎ ভিন্ন স্বাদের এই ফেস্টুনগুলি নজর কাড়ছে পথচলতি মানুষদের।

এর আগে লোকসভা ভোটের আগেও ‘নাগরিক সমাজের’ এ হেন তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ‘নাগরিক সমাজের’ আড়ালে এমন সুকৌশলে রাজনৈতিক প্রচারের কাজে নেমেছেন কে বা কারা— সে সময়েও এই উত্তর মেলেনি। দমদম রোডের এক বাসিন্দা অবশ্য বলছেন, ‘‘লেখাগুলো পড়েই বোঝা যাচ্ছে যে, এই নাগরিক সমাজ শাসকদলের সমর্থক। কিন্তু যিনি তৃণমূল, বিজেপি বা সিপিএমের সমর্থক, তাঁর তো প্রথম পরিচয় তিনি নাগরিক। তাই এমনই কিছু নাগরিক হবেন যাঁরা প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন না, অথচ কিছু বলতে চাইছেন। তাই তাঁরাই এই ফেস্টুন লিখে থাকতে পারেন।’’

দমদম রোডের (Dumdum Road) এই ফেস্টুনগুলি সম্পর্কে অবগত আছেন স্থানীয় বিধায়ক ব্রাত্য বসুও। তিনি বলছেন, ‘‘এই নাগরিক সমাজ যাঁরা এগুলি লিখেছেন, তাঁরা হয়তো সামনে আসতে চান না। সরাসরি রাজনীতিও করতে চান না। কিন্তু এঁরা বিজেপি-বিরোধী। রাজ্য জুড়েই তো এই রকম নাগরিক সমাজ সরব হচ্ছে, প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে। এঁরা হয়তো প্রকারান্তরে আমাদেরই সমর্থক।’’

তবে বিজেপির উত্তর শহরতলি জেলার সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, ‘‘এই সব ফেস্টুন দেখে বোঝা যায় তৃণমূলের সমর্থকেরা দিশাহীন হয়ে এমন লিখছেন। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার জন্যই এই ভাবে আড়ালে থেকে প্রচার করছেন ওঁরা।’’

তবে অভিনব এই ফেস্টুনগুলি রাজনৈতিক প্রচারে কিছুটা নতুনত্ব এনেছে বলে মনে করছেন দমদমের বাসিন্দাদের একাংশ। ওই এলাকার এক বাসিন্দার প্রতিক্রিয়া, ‘‘রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান সম্পর্কে ধারণা না থাকা, সহজপাঠের রচয়িতার নাম না জানা অথবা করোনা কী ভাবে কাটবে সেই নিয়ে কুসংস্কারগ্রস্ত কথা বলা কিন্তু কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়। যে দলই এই ধরনের মন্তব্য করুক না কেন, এর বিরোধিতা করছি। তাই সাধারণ নাগরিক হিসেবে এই ব্যঙ্গাত্মক ফেস্টুনগুলি আমাদের ভালই লেগেছে।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen