বাংলার মেয়েরা বড়ি, আচারের গণ্ডি টপকে এখন গৃহসজ্জা ও ফ্যাশন ডিজাইনের সামগ্রী সরবরাহ করছে সৃষ্টিশ্রী মেলায়

মহিলা দ্বারা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উৎপাদিত মূল্যবান সামগ্রী এই প্রথমবার দুর্গাপুর হাটে প্রদর্শিত ও বিক্রি করা হচ্ছে। প্রায় ১২০ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন

January 24, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে এবং আনন্দধারা প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হস্তশিল্পের সেরা সম্ভার নিয়ে দুর্গাপুরে শুরু হয়েছে সৃষ্টিশ্রী মেলা। এই মেলায় দক্ষিণবঙ্গের ৫টি জেলা বীরভূম, বাঁকুড়া , পুরুলিয়া পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিখ্যাত মহিলা দ্বারা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উৎপাদিত মূল্যবান সামগ্রী এই প্রথমবার দুর্গাপুর হাটে প্রদর্শিত ও বিক্রি করা হচ্ছে। প্রায় ১২০ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন।

মহিষের রূপ ধরা অসুরকে বধ করে মহিষাসুরমর্দিনী হয়েছিলেন মা দুর্গা। সেই মহিষের শিং দিয়ে তৈরি দুর্গা প্রতিমা নজর কাড়ল সৃষ্টিশ্রী মেলায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা এই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন। এই শিল্পের পোশাকি নাম হর্ন আর্ট। মোষ মারা গেলে বা কোনও কারণে মোষের শিং ভেঙে পড়লে তা সংগ্রহ করেন দলের মেয়েরা। এরপর মেশিন দিয়ে কাটিং করে নানান সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়।

মেলায় নজর কেড়েছে ঝাড়গ্রামের সাবাই ঘাস দিয়ে তৈরি গাছের টব থেকে শুরু করে চেয়ার টেবিলও। একইভাবে মেলায় স্থান পেয়েছে আলিপুরদুয়ার স্বনির্ভর দলের তৈরি কাঠের গন্ডার, দক্ষিণ দিনাজপুরের স্বনির্ভর দলের মেয়েদের তৈরি কুশমন্ডি মুখোশ। অনেকের ধারণা ছিল, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের তৈরি সামগ্রীর মেলা মানেই আচার, বড়ির মেলা। বাংলার মেয়েরা যে বড়ি, আচারের গণ্ডি টপকে এখন অভিজাত শ্রেণির গৃহসজ্জা ও ফ্যাশন ডিজাইনের সামগ্রী সরবরাহ করছেন, এই মেলা তা প্রমাণ করেছে।

দুর্গাপুরে সৃষ্টিশ্রী মেলার দু’টি প্যাভেলিয়ন তৈরি করা হয়েছে। প্রথম প্যাভেলিয়নে রয়েছে নানা ধরনের শো পিস। একদিকে শোলার মা দুর্গা, অন্যদিকে কাঠের দুর্গা প্রতিমা। মোট চার ধরনের জিনিস দিয়ে তৈরি মা দুর্গার মূর্তি বিক্রি হচ্ছে। সেসব সংগ্রহ করতে রুচিসম্পন্ন দুর্গাপুরবাসীর ভিড় করছেন মেলায়। ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার দামি শো পিসও বিক্রি হচ্ছে।

সৃষ্টশ্রী মেলার এক কোণে কাঁকসার প্রদর্শনী। তুলে ধরা হয়েছে মূলার আর্টে। এটি মূলত দু’টি জেলার সংস্কৃতির এক মিলনক্ষেত্র। আত্মপ্রকাশের পরই বিপুল চাহিদা কাঁকসা স্বনির্ভর দলের তৈরি এই মুলার আর্টের শো পিসের। দ্বিতীয় পাভেলিয়নটিতে বাহারি শাড়ির সম্ভার। একাধিক মডেলকে শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। জামদানি, বালুচরি, কাঁথা স্টিচ ইত্যাদি বাংলার নানা প্রান্তের শিল্পশৈলীর সমাহার এই প্যাভেলিয়নে। উৎকৃষ্ট মানের সামগ্রী করেই থেমে নেই বাংলার মেয়েরা। তাঁরা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে প্রশিক্ষণও নিয়ে ওইসব সামগ্রীর বাণিজ্যিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। তাই স্বনির্ভর দলে তৈরি সামগ্রীর উপর বসছে বারকোড। এমনকী অনলাইনে এইসব সামগ্রী বিক্রির ব্যবস্থাও করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen