দার্জিলিংয়ের গ্লেনারিজ আজ শিরোনামে
ব্রিটিশ আমল থেকে দার্জিলিয়ের ম্যাল রোডের বুকে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বেকারি-রেস্তরাঁ। সকাল সকাল হিমালয় দেখতে দেখতে এখানে বসে পোচ-সসেজ খাওয়ার মজাই আলাদা।
পুরভোটের ফল প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে উঠে এসেছেন অজয় এডওয়ার্ড।
কে তিনি? একজন আদ্যন্ত ব্যবসায়ী; এই ছিল তাঁর একমাত্র পরিচয়। বিগত বছরের নভেম্বরে অজয় হামরো পার্টি তৈরি করেছিলেন আর আজ মাত্র তিন মাসের মধ্যেই পাহাড়ের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এল তাঁর দল! যেন এক স্বপ্নউড়ান, পাহাড়ের রাজনীতিতে ধূমকেতুর মতো উঠে আসা অজয় হলেন দার্জিলিয়ের জনপ্রিয় রেস্তোরাঁর গ্লেনারিজের কর্ণধার।
ব্রিটিশ আমল থেকে দার্জিলিয়ের ম্যাল রোডের বুকে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বেকারি-রেস্তরাঁ। সকাল সকাল হিমালয় দেখতে দেখতে এখানে বসে পোচ-সসেজ খাওয়ার মজাই আলাদা। খানার সঙ্গে পর্যটকদের এক টুকরো কাঞ্চনজঙ্ঘার স্বাদ দেওয়া গ্লেনারিজের ইউইসপি। শোনা যায়, কোন এক ইটালিয়ান ভদ্রলোক এই বেকারি খুলেছিলেন। চকোলেট, টার্ট, পেস্ট্রি গ্লেনারিজের জবাব নেই।দার্জিলিং বেড়াতে গিয়ে একবার ম্যালে গিয়ে গ্লেনারিজের স্বাদ নেননি এমন পর্যটক পাওয়া দুষ্কর। পর্যটকেরা দার্জিলিং ম্যালে এসে গ্লেনারিজের চা পান করবেন না, বা কেক কিনবেন না এমনটা ভাবাই যায় না।
রাজ্যের অন্যতম ঐতিহ্যবাহি কফি শপের তালিকার মধ্যে অন্যতম সম্মানীয় স্থান দখল করে গ্লেনারিজ। ১৯১১ সালে গ্লেনারিজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখানকার লাল সাদা চেক টেবিল ক্লথে বসে খাওয়ার আনন্দই আলাদা। সঙ্গে থাকে দার্জিলিং চা, কফি। কিংবদন্তি রেস্তোরাঁ গ্লেনারিজের পরিবেশ পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এখানে বসে চারপাশের দার্জিলিং শহরের একটা অসাধারণ ভিউ পাওয়া যায়, সন্ধ্যায় গ্লেনারিজ থেকে দার্জিলিংয়ের অপরূপ রূপ ধরা দেয়। এখানকার সেরা খাবারের তালিকায় রয়েছে চাইনিজ, ইন্ডিয়ান কন্টিনেন্টাল খাবার। তবে এদের চাইনিজ খাবারের জবাব নেই, স্টাটার থেকে শুরু করে স্যুপ, মেইন কোর্স সবতেই অজস্র খাবারের সম্ভার সাজিয়ে রেখেছে গ্লেনারিজ। যা মুগ্ধ করে ক্রেতাদের।
তবে এদের নিজস্ব বেকারির কেক পেস্ট্রি আর স্পেশাল চা’তেই কিস্তিমাত করেছে গ্লেনারিজ। দার্জিলিয়ে বড়দিনে মানেই গ্লেনারিজের কেক, বছরের ওই সময়টাতেই সব থেকে বেশি মানুষের ঢল নামে গ্লেনারিজে। পাম কেকের চাহিদা থাকে সবথেকে বেশি।
কেবল খাবার নয়, মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে গ্লেনারিজ। অতিমারি আবহে সঙ্কটের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছিল দার্জিলিংয়ের বিখ্যাত বেকারি গ্লেনারিজ।
করোনার প্রথম ঢেউতে লকডাউনের মধ্যে গ্লেনারিজ বেকারি অভাবী মানুষদেরকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে মজুত খাদ্য শেষ না হওয়া অবধি বিনামূল্যে রুটি দিয়েছিল। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গ্লেনারিজ নিজেদের রেস্তোরাঁকে অস্থায়ী আইসোলেশান সেন্টার বানিয়ে পাহাড়ের মানুষ জীবন রক্ষা করেছিল। সরকারের সাহায্যে কার্যত হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছিল সেই আইসোলেশন সেন্টার, উপকৃত হয়েছিলেন বহু মানুষ।