জেনে নিন জামাইষষ্ঠী নিয়ে লোকাচার, পৌরাণিক ইতিহাস ও ঐতিহ্য

ষষ্ঠীকে সন্তান-সন্ততির দেবী বলা হয়। বট, করমচার ডাল পুঁতে প্রতীকী অরণ্য হিসেবে পুজো করা হয়।

June 12, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি সৌজন্যেঃ যামিনী রায়

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাঙালি বাড়ির অন্যতম বড় উৎসব হল জামাইষষ্ঠী। আদপে এটি ছিল অরণ্যষষ্ঠী। জ্যৈষ্ঠর ভোরে মায়েরা তাল পাতার পাখা, আম, কলা, খেজুর ছড়া, করমচা, জামরুল, ইত্যাদি ফল, দূর্বা ও বাঁশ পাতা, জলের ঘটি ইত্যাদি নিয়ে নিকটবর্তী জলাশয় বা নদীতে স্নান করতে যান। এমনই রেওয়াজ নিয়ম। এই রীতিকে বলা হয় পাখা ধোয়া। অঞ্চল এবং পরিবার ভেদে ফলের সংখ্যা ও দূর্বার গাছা তৈরির ফারাক দেখা যায়।

ষষ্ঠীকে সন্তান-সন্ততির দেবী বলা হয়। বট, করমচার ডাল পুঁতে প্রতীকী অরণ্য হিসেবে পুজো করা হয়। এই জন্য জামাইষষ্ঠীকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলা হয়। ষষ্ঠীর উদ্দেশ্যে ঘট স্থাপন করা হয়। প্রত্যেকের দূর্বাগাছা থেকে বারোটা দূর্বা পূজার ঘটে দেওয়া হয়। এরপর ছেলে মেয়েদের ষাটের জল দিয়ে হাতে হলুদ সুতো বেঁধে দেওয়া হয়। এ যুগে নব বস্ত্র, উপহার, ফল- ফলাদি, পান-সুপারি, ধান- দূর্বা, বাঁশের করুল, তালের পাখা, করমচা দিয়ে শাশুড়ি মায়েরা জামাইষষ্ঠী পালন করেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল ষষ্ঠীকে জামাইষষ্ঠী হিসেবে পালন করা হয়।

পৌরাণিক ইতিহাস অনুযায়ী, মা ষষ্ঠীর বাহন হল বিড়াল। একটি পরিবারে দুটি বউ ছিল। ছোট বউটি ছিল খবু লোভী, বাড়িতে যেদিন যেদিন মাছ ও ভাল ভাল খাবার রান্না হত, সেদিন সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিত আর দোষ দিত বাড়ির বিড়ালের উপর। এতে দেবী ষষ্ঠী রেগে যান এবং ছোট বউয়ের সাত পুত্র ও এক কন্যার প্রাণ হরণ করেন। তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় ছোট বউ মনের দুঃখে কাঁদতে থাকে। তখন দেবী ষষ্ঠী বৃদ্ধার বেশে তার কাছে এসে হাজির হন, তখন সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। দেবী তখন ওই স্ত্রীলোককে তার আচরণের কথা মনে করিয়ে দিয়ে, নিজের রূপ ধারণ করেন। নিজের কৃতকর্মে অনুতপ্ত ছোট বউ ক্ষমা চাইলে, দেবী তাঁর সন্তান ফিরিয়ে দিতে আরম্ভ করেন। ক্রমে ক্রমে তিনি সন্তান ফিরিয়ে দেন। এরপর থেকেই ষষ্ঠী পুজোর মাহাত্ম্য সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen