কন্টেইনমেন্ট জোন চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু কলকাতা পুরসভার

গত ২৫ ডিসেম্বর যেভাবে পার্ক স্ট্রিটে ভিড় উপচে পড়েছিল, তা নিয়ে আগেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছিল বিভিন্ন মহল।

December 30, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি: প্রতীকী

 শহরে ফিরতে চলেছে কন্টেইনমেন্ট জোন। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা। পুলিস, কাউন্সিলার এবং বরো স্বাস্থ্য আধিকারিকদের এই মর্মে বার্তাও পাঠানো হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। শহরের কোথায় কোথায় করোনা আক্রান্তের বাড়বাড়ন্ত, তা চিহ্নিত করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই কাজ সম্পূর্ণ হলে, তার ভিত্তিতে চিহ্নিত করা হবে কন্টেইনমেন্ট জোন। 


গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪০ জন। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় সংখ্যাটা ছিল ৩৮২। এক ধাক্কায় কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন পুরসভা থেকে নবান্ন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আধিকারিকদের নিয়ে তাই বুধবার জরুরী বৈঠকে বসেছিলেন ফিরহাদ হাকিম (ববি)। ছিলেন ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষও। অন্যদিকে, গঙ্গাসাগরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৩ জানুয়ারি থেকে ফের প্রয়োজনে কন্টেইনমেন্ট জোন পদক্ষেপ চালু করা হতে পারে। সেই সূত্র ধরে এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, কোথায় কোথায় করোনা বেশি হচ্ছে, সেই এলাকাগুলি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে কন্টেইনমেন্ট জোন না করে মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট করা হবে। বিষয়টি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে পুলিসের সহযোগিতা নিয়েই করবে পুরসভা। পুর স্বাস্থ্য বিভাগ জানাচ্ছে, গত দু’দফার করোনা ঢেউয়ের সময় শহরে বাইপাস সংলগ্ন পূর্ব কলকাতা, দক্ষিণ এবং সংযুক্ত এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল। এবার সেই ভৌগলিক চরিত্রের তারতম্য ঘটেছে। সূত্র বলছে, শহরে ৩, ৪, ৫, ৬, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৬— এই বরোগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা মোটামুটি বেশি। এক আধিকারিক বলেন, মধ্য এবং উত্তর কলকাতাতেও সমানতালে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। ফলে, যতক্ষণ বরো স্বাস্থ্য আধিকারিকদের রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না, ততক্ষণ নির্দিষ্ট করে কোনও এলাকায় করোনা উর্ধ্বমুখী বলা সম্ভব নয়। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই এলাকা চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ করে দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে নতুন বছরের শুরু থেকেই শহরের বিভিন্ন অংশে ফের ফিরতে পারে কন্টেইনমেন্ট জোন অথবা মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন। গত ২৫ ডিসেম্বর যেভাবে পার্ক স্ট্রিটে ভিড় উপচে পড়েছিল, তা নিয়ে আগেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছিল বিভিন্ন মহল। বিতর্কও কম হয়নি। তারপর থেকেই দেখা গেল আস্তে আস্তে ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। ফলে এই পরিস্থিতির জন্য মানুষের অসচেতনতাকেই দায়ী করছে প্রশাসনিক কর্তারা। ২৪ ঘণ্টা পরেই ৩১ ডিসেম্বর। তাই বর্ষবরণের রাতে পার্ক স্ট্রিট সহ শহরের অন্যত্র ভিড় নিয়ে চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন। সেক্ষেত্রে ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট, গড়িয়াহাট সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফের মাস্ক বিলি, বাজারে বাজারে মাইকিং, অটোতে প্রচারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, বর্ষবরণের রাতে উৎসবমুখর মানুষকে করোনা বিধি মানাতে কড়া ভূমিকা নিতে পারে প্রশাসনকে।  অন্যদিকে, বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলার সাধনা বোস, মেয়রের অফিসের এক কর্মীরও করানো আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। স্বাস্থ্যভবনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ১০৮৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কলকাতা, সংলগ্ন দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি মিলিয়ে ৮৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen