বাংলার দুগ্গা পুজো: বর্ধমানের চোংদার বাড়িতে বোধন হয় কিন্তু বিসর্জন হয় না, কেন জানেন?

বর্তমানে জমিদারি না থাকলেও প্রায় ৪৫০ বছরের প্রাচীন পুজোর ঐতিহ্য আর পরম্পরা টিকিয়ে রেখেছেন পরিবারের বর্তমান সদস্যরা।

September 3, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
চোংদার বাড়ির দুর্গা প্রতিমা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্ধমানের গুসকরায় কয়েক শতাব্দী প্রাচীন চোংদার বাড়ির দুর্গাপুজো । ঐতিহ্য, জাঁকজমক, ধুমধামে এখন‌ও ভাঁটা পড়েনি। পুজোর ৪ দিনই হোম-যজ্ঞ, দশমীতে বিসর্জনের বদলে ওই দিন ঘট প্রতিষ্ঠা, বন্দুক চালিয়ে সন্ধিপুজো, চার দিনই প্রদীপ জ্বেলে রাখা, এই পুজোর বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও এখানে নবমীর দিন হয় কুমারী পুজো।

শাক্ত মতে পুজো হয় এই জমিদার বাড়িতে। ১৯৭৮ সালের ভয়ঙ্কর বন্যায় মারা যায় প্রচুর গবাদিপশু। সেই থেকে এই পুজোয় মোষ ও ছাগ বলি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে চালকুমড়ো বলির প্রথা চালু রয়েছে। ভোগ রান্না হয় প্রায় একান্ন থালার। বাড়ির মেয়েরাই সাধারণত ভোগ রান্না করেন। এছাড়াও পুজোর চারদিন ধরে চলে এলাকাবাসীদের পাত পেড়ে খাওয়ানোর পালাও।

জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে চট্টগ্রাম থেকে গুসকরায় চলে আসেন চোংদার জমিদার। মূলত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাজে সাহায্য করতেই তাঁদের ডাকা হয়। ধীরে ধীরে চোংদার বাড়ির লোকেরাই হয়ে ওঠেন ওই অঞ্চলের জমিদার। এককালের জমিদারদের বিশাল বাড়ির মধ্যে বিরাট দালান। দুর্গাপুজো ছাড়াও কালীপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোও বহুদিন ধরে চলে আসছে।

বর্তমানে জমিদারি না থাকলেও প্রায় ৪৫০ বছরের প্রাচীন পুজোর ঐতিহ্য আর পরম্পরা টিকিয়ে রেখেছেন পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। জমিদার বাড়ির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বিরাট দুর্গা মন্দির। এখনও পুজোর ৪ দিন মেতে ওঠেন পরিবার-সহ এলাকার মানুষরা। শোনা যায়, এক সময় কলকাতার নামকরা কোম্পানির যাত্রাপালার আসর বসত সেখানে।

সাধারণত পুজোর রীতি অনুযায়ী দশমীর দিনে ঘট বিসর্জন করা হয়। কিন্তু চোংদারদের বাড়িতে দশমীর দিন পুজোর ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই ঘট টানা এক বছর ওখানেই রাখা হয়। পরের বছর ষষ্ঠীর দিন তা বিসর্জন হয়। জানা গিয়েছে,
চোংদার পরিবারের মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন এই ঘট বিসর্জন করা হয় না।

পথ নির্দেশ: যদি নিজেদের বাইক অথবা গাড়িতে আসেন তবে কোলকাতা থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ধরে প্রথমে আসুন পানাগড়। পানাগড় থেকে মোরগ্রামের রাস্তা ধরে গুসকরার চোংদার বাড়ি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen