আগামী আার্থিক বছরে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর প্রস্তাবিত খরচ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা

ইতিমধ্যে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এই প্রকল্পে প্রায় দু’কোটি আবেদন জমা পড়েছে।

September 15, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

 তিনি রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। নারী ক্ষমতায়নই ছিল তাঁর প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বরাবর সেদিকে বিশেষ জোর দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে একে এনেছেন আনন্দধারা, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী ইত্যাদির মতো প্রকল্প। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই গৃহিনীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘হাতখরচের’ টাকা তুলে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন মমতা। আর প্রথম দিন থেকে এই প্রকল্পে নাম লেখাতে পড়েছে লম্বা লাইন। মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া দেখে বরাদ্দ বাজেট ছাপিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত খোদ অর্থদপ্তর। এই খাতে বর্তমান অর্থবর্ষের বাজেটে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা আলাদা করে বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু যে হারে আবেদন জমা পড়ছে, তাতে প্রকল্পের খরচ চলতি বছরে ১৭-১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে বাধ্য। আর তা দেখেই আগামী আার্থিক বছরে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর জন্য বাজেট বাড়াতে চলেছে নবান্ন। সূত্রের খবর, সেই প্রস্তাবিত খরচের অঙ্কটা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

আগামী অর্থবর্ষের জন্য এখন থেকেই বাজেট প্রস্তাব প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের অর্থসচিব মনোজ পন্থ। অর্থাৎ, কার্যত ছ’মাস আগে। সোমবার সেই মর্মে দপ্তরের অধীনস্থ সব ডিরেক্টরেটের কাছে গিয়েছে নির্দেশিকা। তাতে দু’টি পর্যায় রয়েছে। এক, ২০২১-২২ আর্থিক বছরের জন্য ‘সংশোধিত বাজেট’ তৈরি। দুই, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য এখন থেকেই ‘প্রস্তাবিত বাজেট’ প্রস্তুতি। 


আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে তা জমা দিতে বলেছেন অর্থসচিব। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে বিধানসভায় পেশ করা রাজ্য বাজেটে প্রতিটি দপ্তরের জন্য আগাম বরাদ্দ ধরা হয়। সেই অনুযায়ী খরচ করে দপ্তরগুলি। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অর্থবর্ষ শেষে বাজেট ছাপিয়ে গিয়েছে। কোভিডের কারণে গত বছর থেকেই সেই অতিরিক্ত খরচে রাশ টেনেছে নবান্ন। সেই মর্মে বিভিন্ন দপ্তরকে নির্দেশও পাঠিয়েছিল অমিত মিত্রের অর্থদপ্তর। এমনকী কোনও দপ্তর বরাদ্দকৃত 
অর্থ খরচ করতে না পারলে তা রাজ্য কোষাগারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইমতো বেশ কয়েকটি দপ্তরের কাছ থেকে বরাদ্দ ফিরিয়ে নিয়েছিল রাজ্য সরকার।


অর্থদপ্তরের সেই নির্দেশিকা জারির পরেই শোনা যাচ্ছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর আগামী আর্থিক বছরের প্রস্তাবিত খরচ। ইতিমধ্যে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এই প্রকল্পে প্রায় দু’কোটি আবেদন জমা পড়েছে। সেই অনুযায়ী ১৭-১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের চিন্তাভাবনা হচ্ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়নের পথে হেঁটেছে নবান্ন। ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে ‘নতুন কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প, ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে প্রায় তিন কোটি মানুষ নাম লিখেয়েছেন বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য।


অর্থদপ্তরের জারি করা নির্দেশিকায় ব্যয় সংকোচনের বিষয়টিও নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে। কোভিডের কারণে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে খরচ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি লকডাউনের ফলে অর্থনীতি থমকে যাওয়ায় টান পড়েছে রাজ্যের কোষাগারে। কিন্তু তার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে কোনও আঁচ পড়ুক, চান না স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। মানুষকে পরিষেবা দেওয়াই তাঁর পাখির চোখ। তাই এত আগে থেকে বাজেট তৈরির নির্দেশ বলেই মনে করছেন নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen