‘শান্ত হোন, আরও দীর্ঘদিন চলবে লড়াই’ – সমর্থকদের বার্তা কৃষক নেতাদের

বুধবার বলেন, তাঁদের মিছিল থেকে বারবার পুলিশকে বলা হয়েছিল তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে আউটার রিং রোডে যেতে চান। কিন্তু পুলিশ তাঁদের যেতে বাধা দিয়েছিল। তাই ব্যারিকেড ভেঙেছিলেন তাঁরা।

January 27, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে (Tractor Rally) কেন্দ্র করে ব্যাপক হিংসার সাক্ষী থেকেছে রাজধানী দিল্লী। বুধবার কৃষক নেতারা সংযত থাকার আবেদন জানালেন সমর্থকদের। এদিন দিল্লী-হরিয়ানা সীমান্তে তাঁরা সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের বক্তব্য, এখনই অধৈর্য হয়ে লাভ নেই। এখনও অনেকদিন ধরে চলবে আন্দোলন (Farmers Protest)। মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই কয়েকজন কৃষক নেতা বেসুরে মন্তব্য করছিলেন। তাঁরা পুলিশের নির্ধারিত পথে মিছিল নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন। পরে মিছিল অনেক জায়গায় ব্যারিকেড ভাঙে। প্রথম যে নেতা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙেছিলেন, তাঁর নাম সতনাম সিংহ পান্নু। তিনি বুধবার বলেন, তাঁদের মিছিল থেকে বারবার পুলিশকে বলা হয়েছিল তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে আউটার রিং রোডে যেতে চান। কিন্তু পুলিশ তাঁদের যেতে বাধা দিয়েছিল। তাই ব্যারিকেড ভেঙেছিলেন তাঁরা।

মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের একাংশ ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন। তাঁদের হাতে ছিল লাঠি ও পতাকা। ‘নিশান সাহিব’ নামে একটি ধর্মীয় পতাকা তাঁরা লালকেল্লায় উড়িয়ে দেন। লালকেল্লার অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে তাড়া করেন। এদিন মোট ৩০০ পুলিশকর্মী আহত হন। মারা যান এক কৃষক। দিল্লী পুলিশ মঙ্গলবারের ঘটনায় ২২টি মামলা করেছে। কয়েকজন কৃষক নেতার নামেও মামলা হয়েছে। হিংসায় যাদের উস্কানি ছিল, তাদের চিহ্নিত করছে পুলিশ। একটি ষড়যন্ত্রের মামলাও করা হয়েছে।

কৃষক নেতাদের একাংশ লালকেল্লার ঘটনার জন্য পাঞ্জাবের গায়ক, অভিনেতা তথা সমাজকর্মী দীপ সিধুকে দায়ী করেছেন। সূত্র অনুয়ায়ী, তিনি বিজেপি সাংসদ সানি দেওলের ঘনিষ্ঠ। সানির ইলেকশন ম্যানেজারও ছিলেন তিনি। স্বভাবতই তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। চক্রান্তের আভাস দেখছে রাজনৈতিক মহল। এক কৃষক নেতা বলেন, “দীপ সিধু সরকারের লোক। এই ষড়যন্ত্রটা আমাদের বোঝা দরকার।” পরে তিনি বলেন, “দীপ সিধু সর্দার নয় গদ্দার।” সোমবারই দিল্লী পুলিশের প্রধান এস এন শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, দেশবিরোধী শক্তি কৃষকদের প্ররোচনা দিচ্ছে। তারা কৃষক মিছিলের সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠতে চায়। অন্যদিকে গত শুক্রবার সিঙ্ঘু বর্ডারে কৃষকরা এক যুবককে তড়িঘড়ি পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাঁদের অভিযোগ, মিছিলে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য পুলিশই প্রশিক্ষণ দিয়ে ছেলেটিকে পাঠিয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত রবিবার দিল্লী পুলিশ কৃষকদের মিছিলে অনুমতি দেয়। সেই সঙ্গে সকলকে সতর্ক করে বলে, “মিছিলের সুযোগে দুষ্কৃতীরা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।” পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক বলেন, “১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে পাকিস্তান থেকে ৩০০ টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য মানুষকে বিভ্রান্ত করা।” মঙ্গলবার দিনভর দিল্লীতে অশান্তির পরে সন্ধ্যায় এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, দিল্লীতে অতিরিক্ত আধা-সামরিক সেনা পাঠানো হবে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও জারি করা হয়েছে কড়া সতর্কতা। দিল্লী ও তার আশপাশের কিছু এলাকায় বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen