অগ্নিগর্ভ লস এঞ্জেলস, ২ হাজার সেনা পাঠালেন ট্রাম্প, ভারতীয় পড়ুয়াকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে মারধর

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:০০: অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের ধরপাকড়কে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলস। পাশাপাশি বিমানবন্দরে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হচ্ছে ভারতীয় পড়ুয়াকে। আমেরিকায় পড়তে আসার জন্য সমস্ত বৈধ কাগজ থাকলেও, অপরাধীর মতো আচরণ করে বিমানবন্দর থেকেই তাঁকে ফেরানো হচ্ছে।
শুক্রবারের পর শনিবারও প্যারামাউন্টের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে শামিল হলেন হাজার হাজার মানুষ। দফায় দফায় অভিবাসন আধিকারিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এই পরিস্থিতিতে লস এঞ্জেলসে দু’হাজার সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হয়েছেন তিনি।
লস অ্যাঞ্জেলসের একটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন শতাধিক প্রতিবাদী। বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে, ফ্ল্যাশ গ্রেনেড ব্যবহার করে। ‘পিগস গো হোম’ স্লোগান তুলে প্রতিবাদীরা মুখোমুখি হন পুলিশের। অনেকে আবার পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘটনাস্থলে ছিলেন ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরাও। এদিকে ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসন ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এইভাবে রাজ্যের অনুমতি ছাড়া সেনা মোতায়েন আইনবিরুদ্ধ। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড আসছেন লস অ্যাঞ্জেলসে।
কুণাল জৈন নামে এক যুবক গত রবিবার আমেরিকার নেওয়ার্ক বিমানবন্দরে ভারতীয় পড়ুয়ার দুর্দশার ওই ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন। একইসঙ্গে লেখেন, ‘গত রাতে এক ভারতীয় পড়ুয়াকে নেওয়ার্ক বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হল। হাতে হাতকড়া পরানো কাঁদতে থাকা ওই পড়ুয়ার সঙ্গে জঘন্য অপরাধীর মতো আচরণ করা হয়। ওই যুবক স্বপ্ন পূরণ করতে এখানে এসেছিলেন, কারও ক্ষতি করতে নয়।’ একইসঙ্গে ভারতীয় দূতাবাস ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, ‘অনাবাসী ভারতীয় হিসেবে আমি অসহায় বোধ করছি। আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। এটা মানবিক বিপর্যয়।’
পড়ুয়ার সঙ্গে মার্কিন পুলিশ ও অভিবাসন আধিকারিকদের ভয়ংকর দুর্ব্যবহারের ওই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই এই ইস্যুতে মুখ খুলল আমেরিকায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস। এক্স হ্যান্ডেলে দূতাবাস জানায়, ‘সোশাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট আমাদের নজরে এসেছে যেখানে দাবি করা হয়েছে একজন ভারতীয় নাগরিক নেওয়ার্ক বিমানবন্দরে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমরা এই বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। ভারতীয় নাগরিকদের সাহায্যের জন্য দূতাবাস সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’