বিশ্ব সেরা কন্যাশ্রী! গুগলের কাছে সম্মানিত মেমারির পড়ুয়া

গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচার এই গোলার্ধের সেরা শিল্পকর্ম, পণ্য এবং সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলি দেখার জন্য মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করে।

May 8, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

হলিউডের সায়েন্স ফিকশন ছবি দেখেন যাঁরা, তাঁরা এরকম মাস্কের (Mask) সঙ্গে পরিচিত। তবে এটি হলিউডের কোনও আর্ট ডিরেক্টর নয়, বানিয়েছেন বর্ধমান জেলার মেমারির দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিগন্তিকা বোস (Digantika Bose)। দিগন্তিকার দাবি, যে কোনও ধরনের ভাইরাস এই মাস্কের ধারেকাছে এলেই তার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটবে। দিগন্তিকার দাবি সত্যি হলে এই ধরনের মাস্কের চাহিদা গগনচুম্বী হবে। 

পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ভি এম ইনস্টিটিউশন (V M Institution) ইউনিট ২-এর ১৭ বছরের ছাত্রীর এই উদ্ভাবনকে সম্মান জানাল গুগল। বাংলার এই কন্যার তৈরি অত্যাধুনিক মাস্কটি জায়গা করে নিয়েছে ‘গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচার’-এ। তার বানানো মাস্কটি দুনিয়ার সেরা ডিজাইনের একটি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। দিগন্তিকার মাস্কটি গুগলের মিউজিয়ামে উপস্থাপিত করতে সহযোগিতা করেছে ‘মিউজিয়াম অব ডিজাইন এক্সেলেন্স, জাদুঘর মুম্বই’। এমন অনন্য নজির গড়ে শুধু পরিবার বা স্কুলেরই নয়, গোটা বাংলার মুখ উজ্জ্বল করল বাংলার কন্যাশ্রী। 

গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচার এই গোলার্ধের সেরা শিল্পকর্ম, পণ্য এবং সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলি দেখার জন্য মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করে। সেখানে সেরা দশটি অনুপ্রেরণামূলক ডিজাইনের মধ্যে স্থান পেয়েছে ভারতের দিগন্তিকা বোসের তৈরি ভাইরাস ধ্বংসকারী মাস্ক। দিগন্তিকা বিজ্ঞানের ছাত্রী। তিনি নিজের বারো ক্লাসের জ্ঞানকে ব্যবহার করেছেন এই বিশেষ মাস্কটি তৈরি করতে। তাঁর বক্তব্য, ঋণাত্মক কোনও আয়ন আমাদের চারপাশের বাতাসে ঘুরে বেড়ানো ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে বেশিরভাগ ভাইরাসকে ধ্বংস করে দেয়। তবে সব ভাইরাস হয় না। তিনি মাস্কের মধ্যে যেমন একটি ব্যাটারি চালিত সার্কিট ব্যবহার করেছেন তেমনই দুটি ফিল্টার টিউব ব্যবহার করেছেন। ব্যাটারি চালিত সার্কিটের মাধ্যমে উৎপন্ন ঋণাত্মক আয়নগুলি মাস্কের ভিতরে প্রবেশ করা বাতাসের ধুলোকণা ও ভাইরাসগুলিকে ধ্বংস করে দেবে। বাকি কাজটা করবে সাবানজল। যে সাবানজল রয়েছে টিউব দুটির মধ্যে। প্রশ্বাস নেওয়ার সময়ে বাতাস টিউবের মধ্যে দিয়ে যখন যাবে তখন সাবানজলের সংস্পর্শে এসে তার মধ্যে থাকা বাকি ভাইরাসগুলিও ধ্বংস হয়ে যাবে। করোনা আক্রান্ত মানুষ যদি এই মাস্কটি পরে থাকে তবে তার নিশ্বাস থেকে বেরনো ভাইরাসগুলোও সাবানজলের সংস্পর্শে এসে মরে যাবে। 

‘গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচার’ বিশ্বজুড়ে বিশ্ব সেরা শিল্পকর্ম, পণ্য এবং সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলির সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের একটি অনলাইন মিউজিয়াম। দর্শকরা নিখরচায় অনলাইনে এই মিউজিয়ামটি দেখতে পারেন। সেখানে গেলেই এই অভাবনীয় উদ্ভাবনটি দেখা যাচ্ছে। সেখানে বিবরণও থাকছে কীভাবে কাজ করবে এই মাস্ক। ভারতের সতের বছর বয়সী কনিষ্ঠতম উদ্ভাবক হিসাবে ডিজাইনটির প্রোটোটাইপ করেছেন দিগন্তিকা, এভাবেই বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

দিগন্তিকার উদ্ভাবিত ভাইরাস ডিটারেন্ট মাস্ক ২০২০ সেখানে স্থান পাওয়ায় খুশি তাঁর বাবা মাও। তাঁর বাবা বললেন, দিগন্তিকার উদ্ভাবন ‘গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচার’-এ বিশ্বসেরা দশটি অনুপ্রেরণামূলক ডিজাইনের মধ্যে স্থান পাওয়ায় আমরা গর্বিত। এর আগেও ও একাধিক নতুন নতুন কাজ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আগামীতে আরও নতুন কিছু সৃষ্টির চেষ্টায় থাকবে। 

দিগন্তিকা বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে এটা জানতে পেরে যে আমার উদ্ভাবিত ভাইরাস ধ্বংসকারী মাস্ক গুগলের মিউজিয়ামে স্থান পেল। এই সম্মান আগামীতে আরও নতুন কিছু করার সাহস দেবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen