৩২তম বর্ষে ‘মহাস্নান পর্ব’ ফুটে উঠছে নেতাজি কলোনি লোল্যান্ডের পুজোয়

জলাশয়কে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করেছে ন’পাড়া দাদা ভাই সঙ্ঘও। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইলার হাত ধরে ১৮তম বর্ষে এখানে ফুটে উঠবে বাংলার প্রতিটি জেলার বৈশিষ্ট্য। পুরুলিয়ার ছৌ নাচ, বাঁকুড়ার টেরাকোটার সঙ্গেই সেখানে স্থান পেয়েছে পুজোমুখর কুমোরটুলির দৈনন্দিন জীবন। ১২০ ফুট সেতুতে উঠলে একনজরে বঙ্গ দর্শন হয়ে যাবে। কারণ, জলাশয় ঘিরে বড় বড় কলসির গায়ে ১২ ফুট বাই ৮ ফুট কুলোর মধ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জেলাওয়াড়ি বৈশিষ্ট্য। ঠিক যেন কলস দর্পণে বাংলার স্পন্দন…।

October 10, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

‘সেই টবিন রোড থেকে শুরু। প্রায় দু’কিলোমিটার আগে থেকে লাইট দেওয়া হয়। কলকাতার খুব কম পুজোতেই এই ব্যবস্থা থাকে।’ মুঠোফোনের ওপার থেকে একরাশ গর্ব ঝরে পড়ছে অঞ্জন পালের গলায়। হবে নাই বা কেন? বরানগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর এই সদস্যই ন’পাড়া দাদা ভাই সঙ্ঘ পুজো কমিটির অন্যতম কর্ণধার। কম যান না দিলীপ নারায়ণ বসুও। বরানগর নেতাজি কলোনি লোল্যান্ডের পুজোর হর্তাকর্তা তিনিই। বিগত কয়েক বছর ধরে একের পর এক চোখধাঁধানো থিমে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করেছে তারা। বরানগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর এই সদস্যের গলাতেও সেই সুর। পাঞ্জাবির বোতাম আটকাতে আটকাতে তাঁর আশ্বাস, ‘মণ্ডপে ঢুকতে না পারার আক্ষেপ আমরা মিটিয়ে দেব। সেরকমভাবেই সব তৈরি হয়েছে।’পুজো কার্নিভালে অংশ নেওয়া এই দুই হেভিওয়েট পুজো কমিটির হাত ধরেই দুগ্গাপুজোয় মাতবে বরানগর।

কথায় বলে, দুর্গাপুজোর অন্যতম উপাচার মহাস্নান। পুজো চলাকালীন দেবীর উগ্রচণ্ডা, প্রচণ্ডা, চামুণ্ডা, চণ্ডিকা, কাত্যায়ণী, ভগবতী, ব্রহ্মাণী, বৈষ্ণবী, ডাকিনী, শাকিনী প্রমুখ ১৪টি রূপকে মোট ১০৮টি উপকরণে স্নান করানো হয়। ৩২তম বর্ষে সেই ‘মহাস্নান পর্ব’ই এবার ফুটে উঠছে নেতাজি কলোনি লোল্যান্ডের পুজোয়। মণ্ডপের বাহারি সজ্জার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে থিমের নাম ‘চালচিত্র’। আর অন্দরসজ্জায় থার্মোকলের তৈরি নিখুঁত পটচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহাস্নান পর্বের বিবরণী। উদ্যোক্তারা আশঙ্কা করেছিলেন, গতবারের মতো এবারও মণ্ডপে প্রবেশের অধিকার পাবেন না দর্শনার্থীরা। তাই প্রস্তুতি সারা হয়েছে পরিকল্পনামাফিক। ৩৭ ফুট উচ্চতার দু’টি দ্বারঘটের মাঝে চালচিত্রের আদলে তৈরি মণ্ডপ। প্রতিমার উচ্চতা বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রায় ২৫ ফুট। যাতে বিশাল জলাশয়ের উল্টোদিক থেকে মায়ের মুখ দর্শন করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা না হয় কারও। শিল্পী সৌরভ দত্তের কথায়, ‘উল্টোদিক থেকে দেখলে মনে হবে একটা চালচিত্রের মধ্যেই সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন দেবী। কিন্তু আদতে তা নয়। মোট তিনটি কুঠুরির মধ্যে থাকবেন তাঁরা। আর প্রতিটিতেই পটচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে পুরাণের গল্প। যার অন্যতম হল দেবীর মহাস্নান।’ 

জলাশয়কে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করেছে ন’পাড়া দাদা ভাই সঙ্ঘও। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইলার হাত ধরে ১৮তম বর্ষে এখানে ফুটে উঠবে বাংলার প্রতিটি জেলার বৈশিষ্ট্য। পুরুলিয়ার ছৌ নাচ, বাঁকুড়ার টেরাকোটার সঙ্গেই সেখানে স্থান পেয়েছে পুজোমুখর কুমোরটুলির দৈনন্দিন জীবন। ১২০ ফুট সেতুতে উঠলে একনজরে বঙ্গ দর্শন হয়ে যাবে। কারণ, জলাশয় ঘিরে বড় বড় কলসির গায়ে ১২ ফুট বাই ৮ ফুট কুলোর মধ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জেলাওয়াড়ি বৈশিষ্ট্য। ঠিক যেন কলস দর্পণে বাংলার স্পন্দন…।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen