সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কোভিড যুদ্ধে সামিল কলকাতার নয়া প্রজন্ম

সময় নষ্টের সোশ্যাল মিডিয়াও এখন ত্রাতার ভূমিকায়।

May 5, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

সোশ্যাল মিডিয়াকে সঙ্গী করেই করোনার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তরুণ প্রজন্ম। রং নয়, দল নয়, তাঁদের একটিই পরিচয়, স্বেচ্ছাসেবক। হাসপাতালের বেডের খোঁজ দেওয়া বা অক্সিজেন সিলিন্ডারের হদিশ দেওয়াই হোক, অনুরোধ পেলেই তোলপাড় করে ফেলছেন তাঁরা। বহু ক্ষেত্রেই সফল হচ্ছেন। বেঁচে যাচ্ছে একটি প্রাণ। এই লড়াইয়ে প্রেসিডেন্সি বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও প্রাক্তনীরা যেমন রয়েছেন, তেমনই তুলনায় অনামী বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাও কাঁধ মিলিয়েছেন। একটু পুরনোরা এই প্রজন্মকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকা নিয়ে তুলোধোনা করতেন। কট্টরপন্থীরা মনে করতেন, এঁরা উচ্ছন্নেই গিয়েছে। সেই ‘উচ্ছন্নে’ যাওয়া প্রজন্মের প্রতিনিধিরাই কেউ দান করছেন প্লাজমা, কেউ হদিশ দিচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্সের। কলকাতা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, একই ছবি। কেউ আবার করোনা রোগীদের বাড়িতে খাবার, ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। কোনও পরিষেবা মূল্য নিচ্ছেন না। কেউ আবার নামমাত্র মূল্যে খাবার রান্না করে এই পরিষেবা দিচ্ছেন। একা বা বয়স্ক রোগীদের কাছে সেই পরিষেবাও এখন অনেক দামি। বহু সংগঠনই দুঃস্থ রোগীদের বিনামূল্যেও খাবার বা ওষুধের বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করছেন।

সময় নষ্টের সোশ্যাল মিডিয়াও এখন ত্রাতার ভূমিকায়। হয়তো বেলঘরিয়ায় কেউ বেড পাচ্ছেন না। বন্ধু বা আত্মীয়ের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেই পোস্ট হতে না হতেই স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী দল বা ব্যক্তির কাছে খবর চলে যাচ্ছে। তিনি এলাকার হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতে ফোন করতে করতে কোথাও না কোথাও বেডের হদিশ করতে পারছেন। খালি বা ভর্তি অক্সিজেন সিলিন্ডারও এভাবে মিলছে। বিভিন্ন ঘটনায় কলকাতার মানবিক মুখ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তা যেন আবার ফিরে এসেছে, বলছিলেন করোনা আক্রান্ত মায়ের জন্য বেড জোগাড় করতে পারা দক্ষিণ কলকাতার এক তরুণী। যাঁরা সাহায্য করেছেন, সেই ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কেউই তাঁর পরিচিত নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করে বেসরকারি একটি হাসপাতালে আইসিইউ বেড জোগাড় করে দিয়েছেন তাঁরা। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই প্রায় অনাহারের মুখে থাকা নিমতার সত্তরোর্ধ্ব গৃহশিক্ষকের কাছে পৌঁছেছে আর্থিক সাহায্যও। শহরের এক সোশ্যাল মিডিয়া বিশ্লেষক বলছেন, এই দলগুলি একটি শৃঙ্খলের এর মতো কাজ করছে।

সোশ্যাল মিডিয়াকে এভাবেই ব্যবহার করা উচিত। অন্যান্য দেশে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে অনেক বড় কাজই হয়েছে। এখন এখানেও সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে। তবে দুম করে অজানা অচেনা কাউকে অক্সিজেন সিলিন্ডার বা দামি ওষুধের জন্য টাকা পাঠিয়ে দেওয়া উচিত হবে না। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য সেখানকার নির্দিষ্ট পেমেন্ট গেটওয়েতেই টাকা দেওয়া উচিত। কেউ যদি ভর্তির জন্য অর্থ দাবি করে, তাহলে সে প্রতারক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen