রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা নয়: সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় সুপ্রিম রক্ষাকবচ
২০২০ সালে হাতরাস গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সময় কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:০০: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা করা যায় না। সংবাদসংস্থা বা সাংবাদিক কোনও সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও তা দেশের সার্বভৌমত্ব বা ঐক্যের ক্ষতি করে না।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: ২০২০ সালে হাতরাস গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সময় কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্রে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তাঁর মতো আরও বহু সাংবাদিক, যেমন আসিফ সুলতান, ফাহাদ শাহ, রূপেশকুমার সিংকেও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের আওতায় আনা হয়েছিল।
সম্প্রতি ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর বিষয়ে সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে একটি জাতীয় নিউজ পোর্টাল ও তার সম্পাদকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ১৫২ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করেছিল অসম পুলিস। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করেছে, “সাংবাদিকতা রাষ্ট্রদ্রোহ নয়। প্রতিবেদন দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপজ্জনক করে না।” বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “কোনও প্রতিবেদনের মাধ্যমে কেউ অস্ত্র পাচার করছে, এমন নয়।”
শীর্ষ আদালত পোর্টাল ও সম্পাদককে রক্ষাকবচ দিয়েছে এবং আপাতত পুলিশকে পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করেছে। কেন্দ্রকেও এ বিষয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ইন্ডিয়ান জার্নালিস্টস ইউনিয়ন (IJU)। জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সাংবাদিকতার স্বাধীনতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং এটি গণতন্ত্রের জয়।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সাল থেকে দেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ২১টি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের হয়েছে। ২০২৩ সালের ‘প্রিজন সেন্সাস’ রিপোর্টে দেখা গেছে, জেলবন্দি সাত সাংবাদিকের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা চলছে। এঁরা সংবাদ সংক্রান্ত সমালোচনার জন্যই অভিযুক্ত হয়েছেন।