মোদীর গুজরাতে নেই শিক্ষক, প্রা‍থমিকের বাচ্চাদের ক্লাস নিচ্ছে পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়ারাই!

উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদেরই দায়িত্ব নিতে হয় ছোটদের পড়াশোনা শেখানোর

May 5, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ভরা ক্লাসে পড়াচ্ছে শিক্ষিকারা। ওয়ান, টু, থ্রি–আলাদা করে কোনও শ্রেণি ভাগ করা নেই। এক সঙ্গে বসেই পড়ছে সবাই। কিন্তু শিক্ষিকার বয়স দশের কোঠায়, তারা পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া! শুনতে অবাক লাগলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) রাজ্য গুজরাটের প্রায় ৮০০টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। ঘটনা দেখে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে আসল শিক্ষক কোথায়? গোটা স্কুলে সাকুল্যে রয়েছেন একজন শিক্ষক। তাঁকেই সমস্ত দায়িত্ব সামলাতে হয়। তাই হাজার কাজের চাপ সামলে ক্লাসে গিয়ে পড়ানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদেরই দায়িত্ব নিতে হয় ছোটদের পড়াশোনা শেখানোর।

গুজরাটের (Gujarat) কচ্ছ অঞ্চলের গ্রাম অঙ্গিয়া নানার একটি স্কুলে ধরা পড়ল এমন ছবি। সেই স্কুলের একমাত্র শিক্ষক বিজয় কুমার প্যাটেল জানিয়েছেন, শিক্ষকতা ছাড়াও স্কুলের মিড-ডে মিল, প্রশাসনিক কাজ, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব, সব কাজই একা হাতে করতে হয়। তিনি আরও বলেছেন, “মাঝে মাঝে পঞ্চম শ্রেণির ভাল পড়ুয়াদের সাহায্য নিতেই হয় আমাকে। ওরা যখন পড়ায়, তখন আমি খাতা দেখি বা স্কুলের অন্যান্য কিছু কাজ করি।”

স্কুলে এসে সারাদিন কীভাবে কাটে বিজয়ের? তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ান। তারপরে তাদের কিছু কাজ দিয়ে অন্য ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে বসেন। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়ারা একসঙ্গেই বসে। তাদের পড়ানো হয়ে গেলে তিনি স্কুলের অন্যান্য কাজ নিয়ে বসেন। তখন পড়ানোর দায়িত্ব যায় পড়ুয়াদের কাছে।

জানা গিয়েছে, এই ৮০০টি স্কুলের থেকে খুব আলাদা নয় গুজরাটের সামগ্রিক প্রাথমিক স্কুলের পরিস্থিতি। এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর করা একটি বক্তব্য। তিনি বলেছিলেন, গান্ধীনগরের ‘বিদ্যা সমীক্ষা কেন্দ্র’র মতো আধুনিক উদ্যোগ অনুসরণ করা উচিত প্রত্যেকটি রাজ্যের। গুজরাটের সামগ্রিক উন্নয়ন দেখে তিনি অত্যন্ত গর্বিত। তাঁর বক্তব্যের কিছুদিন পরেই প্রকাশ্যে এসেছে গুজরাটের প্রাথমিক স্কুলের এহেন দশা।

সামনেই গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই স্কুলের এমন অবস্থা নিয়ে গুজরাট সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে আপ, কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলি। দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া টুইট করে লিখেছেন, “২৭ বছর ধরে গুজরাটের শিক্ষাক্ষেত্রে কী অবদান বিজেপি সরকারের।” সঙ্গে স্কুলের দুর্দশার কয়েকটি ছবিও দিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসও পালটা দিয়ে বলেছে, গত দু’ বছরে মাত্র ১৯টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০০টি বেসরকারি স্কুল তৈরি হয়েছে। গুজরাটের শিক্ষা সচিব বিনোদ আর রাও যদিও বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen