শুধু আমির-কিরণ কেন, বিবাহ বিচ্ছেদের নজিরে নেহাত কম এগিয়ে নেই টলিউডও

বলিউডে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু টলিউডেও নেহাত এই নজির কম নেই।

July 6, 2021 | 4 min read
Published by: Drishti Bhongi

শনিবার সকালে আমির খান নিজেই তাঁর স্ত্রী কিরণ রাও- এর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ করেছেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে আমির-কিরণ জানিয়েছেন, ‘এই ১৫ বছর আমরা অনেক অভিজ্ঞতা, আনন্দ, হাসি ভাগাভাগি করেছি। আমাদের সম্পর্ক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে এতোদূর এগিয়েছে। এখন থেকে আমরা নতুন আরেক অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি। যেখানে আমরা আর স্বামী-স্ত্রী থাকছি না। তবে আমাদের সন্তান আজাদকে লালনপালন ও পানি ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য কাজ আমরা এক সঙ্গেই করবো।’

১৬ বছরের সম্পর্ক ছেদ করে ২০০২ সালে প্রথম স্ত্রী রিনাকে ডিভোর্স দেন আমির। ২০০৫ সালে বিয়ে করেন কিরণ রাওকে। তাদের একটি সন্তান রয়েছে। আবার কিরণের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের খবর সামনে আসতেই হইচই পড়ে গেছে সর্বত্র।

বলিউডে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু টলিউডেও নেহাত এই নজির কম নেই। টলিউডেও ঘর ভেঙেছে অনেক তারকার। কখনও সামনে এসেছে তাঁদের সম্পর্কের তিক্ততা, আবার কখনও চুপচাপ মিউচুয়াল ডিভোর্সের পথ বেছে নিয়েছেন অনেকে। এক ঝলকে দেখে নিন বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে কোন কোন টলি তারকার।

কিশোর কুমার- রুমা গুহ ঠাকুরতা: বাংলা সিনেমা জগতের অন্যতম জনপ্রিয় দম্পতি। ১৯৫১ সালে কিশোর কুমারের সঙ্গে রুমা গুহ ঠাকুরতার বিয়ে হয়। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ১৯৫৮ সালে ভেঙে যায় সেই বিয়ে।

অপর্ণা সেন-মুকুল শর্মা: স্বর্ণযুগের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালক অপর্ণা সেনের ডিভোর্স নিয়ে একসময় বেশ জলঘোলা হয়েছিল। প্রথম স্বামী সঞ্জয় সেনের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ‘পরমা’ খ্যাত অভিনেতা মুকুল শর্মাকে বিয়ে করেছিলেন অপর্ণা। তবে, সেই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি।

প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী: আশির দশক থেকে এই রোম্যান্টিক জুটি লক্ষ লক্ষ বাঙালি দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। তাঁদের অনস্ক্রিন রোম্যান্স অফস্ক্রিনেও হিট হয়ে যায় যখন ১৯৯২ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী। কিন্তু, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ’৯৫-তেই মিউচুয়াল ডিভোর্সের পথ বেছে নেন দু’জনেই। এরপর অপর্ণা গুহঠাকুরতার সঙ্গে বিয়ে ও ডিভোর্স হয়। তারপর অর্পিতা পালের সঙ্গে বিয়ে হয় ২০০২ সালে।

স্বস্তিকা-প্রমিত: ১৯৯৮ সালে বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেনের সঙ্গে চার হাত এক হয় স্বস্তিকার। তাঁর বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না বলেই জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। বিয়ের দু’বছরের মাথায় স্বামীর বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন তিনি। প্রমিত তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগও করেছিলেন নায়িকা।

রচনা-সিদ্ধান্ত: বাংলা সিনেমা ছাড়াও একাধিক ওড়িশি ছবিতে অভিনয় করেছেন রচনা। সেখান থেকেই প্রেম সিদ্ধান্ত মহাপাত্রের সঙ্গে। কটকে ২০০৪ সালে সিদ্ধান্তের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন রচনা। তবে, বিয়ের এক বছরের মাথায় দু’জনের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ওড়িশি ছবি করাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন নায়িকা।

রাহুল-প্রিয়ঙ্কা: চিরদিনই তুমি যে আমার খ্যাত রাহুল প্রিয়াঙ্কার বিয়ে বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। এর কিছুদিন পর থেকেই অভিনেতা রাহুলের সঙ্গে যে প্রিয়াঙ্কার সম্পর্ক ভাঙতে শুরু করে। তাঁদের ডিভোর্সের মামলা প্রথমে চলে দুজনের বোঝাপড়ার মাধ্যমে। কিন্তু আচমকাই মিউচুয়াল ডিভোর্স থেকে কনটেস্ট ডিভোর্সের পথে এগোন অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা । দুজনের সম্পর্কের তিক্ততার মূল কারণ হিসাবে একাধিক বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন প্রিয়াঙ্কা।

শ্রাবন্তী-রাজীব: ১৫ বছর বয়সে ডিরেক্টর রাজীব বিশ্বাসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন শ্রাবন্তী। দীর্ঘ ১১ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কের তিক্ততা সামনে আসে যখন প্রকাশ্যেই রাজীবকে বিচ্ছেদ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন নায়িকা। ওই মামলা আদালত অবধি গড়ায়। রাজীবের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন শ্রাবন্তী। বহু নারীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবিও করেছিলেন তিনি। এরপর কৃষাণ বিরাজের সঙ্গে বিয়ে ও ডিভোর্স হয়। তবে বর্তমানে তিনি রোশন সিংয়ের সঙ্গে বিবাহিত। কিন্তু সেই বিয়েও এখন বিচ্ছেদের আর্জি নিয়ে আদালতে গিয়ে ঠেকেছে।

মানালি-সপ্তক: টেলিভিশনের এক সময়ের অভিনেত্রী ‘মৌরি’ ওরফে মানালি এখন বড় পর্দার অভিনেত্রী। ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন গায়ক সপ্তককে। শোনা গেছিল, সপ্তকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নাকি বেশ ভেঙেই পড়েছিলেন মানালি। তবে, এখন সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছেন অভিনেত্রী। এখন তিনি নির্দেশক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী।

গৌরব-অনিন্দিতা: মহানায়ক উত্তমকুমারের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায় এবং ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অনিন্দিতা বসুর প্রেম ২০১৩ সালে পরিণতি পেয়েছিল বিয়েতে| কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই এই বিয়ে ভেঙে যায়। বিচ্ছেদের পর গৌরব বর্তমানে ছোটপর্দায় মনোনিবেশ করেছেন ও দেবলিনা কুমারকে সম্প্রতি বিয়ে করেন।

রূপা-ধ্রুব: স্বামী ধ্রুব মুখোপাধ্যায় নাকি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন, বিচ্ছেদের সময় এমনই অভিযোগ করেছিলেন অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ১৯৯২ সালে ধ্রুবকে বিয়ে করেছিলেন রূপা। ২০০৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। শোনা গিয়েছিল, বিচ্ছেদের পর নাকি সহকারী শিল্পী দিব্যেন্দুর সঙ্গে মুম্বইয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন রূপা।

নুসরত-নিখিলঃ বিদেশে গিয়ে চোখ ধাঁধানো ডেস্টিনেশন ওয়েডিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাখো মাখো পোস্ট। বেশ চলছিল টলিপাড়ার রূপকথা। কিন্তু আচমকাই কী হল এমন? নিখিল-নুসরতের সম্পর্কে নাকি চিড় এখন প্রকাশ্যে! তাঁরাও বিবাহ বিচ্ছেদের পথেই হাঁটতে চলেছেন। যদিও নায়িকার দাবি তাঁদের বিয়েই বৈধ নয়। তাঁরা সহবাস করেছেন মাত্র। বিবাহ বিচ্ছেদের প্রশ্নই উঠছে না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen