কোভিড রুগীকে ফেরালো নার্সিংহোম, হাসপাতালে মৃত্যু
১৮ বছরের শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জীবনপ্রদীপ নিভল মারণ কোভিডে, শুক্রবার রাত পৌনে দশটায় মেডিক্যাল কলেজে
চার হাসপাতাল ঘুরেও শেষরক্ষা হল না। উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার ফলও আর জানা হবে না। ১৮ বছরের শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জীবনপ্রদীপ নিভল মারণ কোভিডে, শুক্রবার রাত পৌনে দশটায় মেডিক্যাল কলেজে ।
বস্তত, করোনা যত বাড়ছে তত বেডের অপ্রতুলতা সামনে আসছে। সামনে আসছে নার্সিংহোমগুলির সংক্রমণের ভয়ে অসহযোগিতা। একদিকে যখন রাজ্য সরকার সবরকম
প্রচেষ্টা করছে মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার, তখন একরকম বিনা চিকিৎসায় প্রাণ গেল কিশোরের।
যদিও পরিবারের অভিযোগ, ৪০ কিলোমিটার ঘুরে শুক্রবার যখন মেডিক্যাল কলেজে শুভ্রজিৎকে আনা হয় ততক্ষণে নেতিয়ে পড়েছে ছেলে। দম নিতে পারছে না। বেড পাওয়া যায়নি হাসপাতালে। মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশ্রাবের জায়গায় সংক্রমণ ধরা পড়েছিল সাতদিন আগে। স্থানীয়
চিকিৎসক আ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছিলেন। সেই ওষুধ খেয়ে অরুচির শুরু। বমি হচ্ছিল ঘন ঘন। মা-বাবা ভেবেছিলেন হয়তো ওষুধের পার্বপ্রতিক্রিয়া। ততক্ষণে ফুসফুসে জাঁকিয়ে বসেছে ভাইরাস। গত বৃহস্পতিবার সকালে ছেলেকে নিয়ে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে যান মা-বাবা । সেখানে বমির ইঞ্জেকশন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে এসে অবস্থার অবনতি হয়। শুভজিতের মায়ের কথায়, রাতে ওর কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। চিৎ হয়ে শুতে পারছিল না।

শুক্রবার সকাল হতেই ফের ছেলেকে নিয়ে ইএসআই হাসপাতালে যান মা-বাবা। সেখানে সুগার টেস্ট করে দেখা যায় শুভজিতের সুগার পাঁচশো ছুঁইছুঁই। ইএসআই হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোগীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক । যে চিকিৎসা দরকার, তা এখানে নেই। দ্রুত অন্যত্র নিয়ে যান। মিডল্যান্ড নার্সিং হোমে যান মা-বাবা। সেখানেই শুভজিতের লালারস পরীক্ষা হয়। দেখা যায় সে করোনা আক্রান্ত।
ততক্ষণে সময় গড়িয়ে গিয়েছে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমছে। মিডল্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, দ্রুত নিকটবর্তী কোভিড হাসপাতালে যান। সেইমতো শুভজিৎকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। অভিযোগ সেখানেও বেড না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকতে হয় রোগীকে। যদিও সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের সুপার পলাশ দাস দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য জানা নেই। হাসপাতালে কোভিডের জন্য বরাদ্দ ৯০টা বেডের প্রত্যেকটিতেই রোগী রয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, টানা ৪ ঘণ্টা সাগর দত্তে বসেছিলেন শুভজিৎ। অবস্থা সঙ্গীন দেখে সেখান থেকেই ১০০ ডায়ালে ফোন করেন শুভ্রজিতের বাবা।