বাংলা বলার ‘অপরাধে’ ওড়িশায় ফের নিগৃহীত বাংলার শ্রমিক, নগদ টাকা-মালপত্র লুঠের অভিযোগ
আক্রান্ত শ্রমিকের দাবি, তাঁকে বাংলাদেশি দাগিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে, ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে নগদ টাকা এবং লুঠ করা হয়েছে মালপত্র।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৩৯: বিজেপি শাসিত রাজ্যে থামছেই না বাঙালি নির্যাতন। বাংলা ভাষায় কথা বলাকে কেন্দ্র করে ফের বাঙালি শ্রমিক আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠল। আক্রান্ত শ্রমিকের দাবি, তাঁকে বাংলাদেশি দাগিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে, ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে নগদ টাকা এবং লুঠ করা হয়েছে মালপত্র।
কাটোয়া থানার করজগ্রাম মাঠপাড়ার বাসিন্দা তারজেন শেখ, যিনি পেশায় ফেরিওয়ালা, গত পাঁচ বছর ধরে ওড়িশার জলেশ্বরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে স্টিলের বাসনপত্র ফেরি করতেন তিনি। অভিযোগ, গত রবিবার সকালে ফেরি করতে বেরোনোর সময় জলেশ্বরের লক্ষণডিহি এলাকায় দুই ব্যক্তি তাঁকে আটকে মারধর করে।
তারজেনের কথায়, ‘‘ওরা আমাকে ওড়িয়া ভাষায় নাম জিজ্ঞেস করে। আমি ওড়িয়া জানি না, তাই বাংলাতেই নিজের পরিচয় দিই। তখনই আমাকে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে।’’ তিনি আরও জানান, প্রহরীরা তাঁর মারধরের দৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ডও করে। পরে তাঁর কাছ থেকে নগদ ৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়, ফেরির বাসনপত্র ভেঙে তছনছ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাঙালি হেনস্থা: ওড়িশায় আক্রান্ত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক, কোনওমতে ফিরলেন বাড়িতে
প্রাণে বাঁচতে কোনওক্রমে পালিয়ে ভাড়াবাড়িতে ফিরতে সক্ষম হন তারজেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। অভিযোগ, তাঁর ডান হাতের কব্জির হাড় ভেঙে গিয়েছে এবং শরীরের সর্বাঙ্গে আঘাত লেগেছে। ঘটনার পরদিনই তিনি ট্রেনে হাওড়া হয়ে কাটোয়ায় ফিরে আসেন। বৃহস্পতিবার কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং কাটোয়া ১ বিডিওকে বিষয়টি জানান।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চল্লিশোর্ধ তারজেনের বাড়িতে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও ছোট মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী এবং ছেলে পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে। ঘটনার পর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গোটা পরিবার। তারজেনের কথায়, ‘‘এবার আবার সেখানে গেলে হয়তো প্রাণেই মেরে ফেলবে।’’