বৃদ্ধাশ্রম দ্বিতীয় বসন্ত না বার্ধক্যের বারাণসী, বিতর্ক

এক পক্ষ বলছেন, প্রবীণদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠালেই প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু একটি শিশুকে যখন আপন জনের স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে হস্টেলে পাঠানো হয়, তখন তো কোনও প্রশ্ন ওঠে না। কেউ যদি শেষ বয়সে স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে চান, তাতে আপত্তি কীসের?

February 13, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এক পক্ষ বলছেন, প্রবীণদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠালেই প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু একটি শিশুকে যখন আপন জনের স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে হস্টেলে পাঠানো হয়, তখন তো কোনও প্রশ্ন ওঠে না। কেউ যদি শেষ বয়সে স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে চান, তাতে আপত্তি কীসের? কেন আমরা সন্তানের উপর বোঝা হয়ে থাকব? অন্য পক্ষের পাল্টা সওয়াল, বৃদ্ধাশ্রমে টাকা দিয়ে পরিষেবা পাওয়া যায়। কিন্তু ভালোবাসা পাওয়া যায় না। শেষ জীবনে পরিত্যক্ত নিঃসঙ্গতার জীবন কাটাবে বলে তো কেউ সন্তানদের মানুষ করেন না।

বৃদ্ধাশ্রম দ্বিতীয় বসন্ত না বার্ধক্যের বারাণসী বিতর্ক। ছবি সৌজন্যেঃ Voice Multimedia

গত ৮ই ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ‘বৃদ্ধাশ্রম একটি যুগোপযোগী ভাবনা, হাহাকার নিরর্থক’-শীর্ষক একটি বিতর্ক সভায় এমনই ভিন্ন মত উঠে এল। বিতর্কে বৃদ্ধাশ্রমের পক্ষে বক্তা ছিলেন সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার, আবৃত্তিকার ঊর্মিমালা বসু, মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র। বিপক্ষে বক্তা ছিলেন চিকিৎসক কুণাল সরকার, অভিনেতা বাদশা মৈত্র, অধ্যাপক উদয়ন বন্দোপাধ্যায় ও প্রাজিত কুমার পালিত। সভার সভাপতিত্ব করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন।

বিতর্কের শুরুতেই পক্ষে বলতে উঠে তিলোত্তমা প্রশ্ন তোলেন, ‘ছোট শিশুদের যখন আপনজনের স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে হস্টেলে রাখা হয়, তখন কেন প্রশ্ন ওঠে না? বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মাকে রেখেও যদি সন্তানরা তাদের যত্ন না করেন, তাহলে সেটা কি অন্যায় হবে না? বয়স হলেই কাউকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয় না। আমাদের সমাজ এখনও ততটা নিষ্ঠুর হয় নি। আর বৃদ্ধাশ্রমকে যতটা ভয়াবহ দেখানো হয়, আসলে বৃদ্ধাশ্রম ততটা ভয়ঙ্কর নয়।’ ঊর্মিমালা বলেন, ‘বাবা মায়েরাই তো সন্তানদের হাত ছেড়ে দূরে চলে যাওয়ার শিক্ষা দেন। তারপর গর্ব করে লোককে বলেন, আমার ছেলে এত ডলার আয় করে। শেষ বয়সে আমি কারও বোঝা হতে চাই না। আত্মাভিমান ও স্বাবলম্বী হয়ে কেউ নিজেই বৃদ্ধাশ্রমে থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen