মূল্যবৃদ্ধির চাপে খাদ্য খরচে কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে আমজনতা!

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৩০: মূল্যবৃদ্ধির দাপটে ক্রমশ কমছে ভারতীয় পরিবারের খাবারের পিছনে খরচ। কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষা বলছে, ২০১২ সালে গ্রামীণ পরিবারগুলি মাসিক আয়ের গড়ে ৫৩ শতাংশ ব্যয় করত খাদ্যপণ্যে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সেটি নেমে এসেছে ৪৭ শতাংশে। শহরাঞ্চলে আরও স্পষ্ট এই পরিবর্তন। সেখানে ২০১২ সালের ৪৭ শতাংশ থেকে কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশে।
সরকারি পরিসংখ্যানেই ধরা পড়েছে, গত ১২ বছরে প্যাকেটজাত ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম এতটাই বেড়েছে যে পেটের ভাতেও আপস করতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। যদিও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির কথাও বলা হচ্ছে, অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই মনে করছেন লাগাতার মূল্যবৃদ্ধিই এর প্রধান কারণ।
গ্রামে খাদ্যে খরচ কমেছে ৬ শতাংশ। শহরে তার চেয়েও বেশি-৭ শতাংশ। অথচ শহুরে আয় তুলনামূলকভাবে বেশি। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকেও এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গত আগস্টে জানিয়েছিল, গত ৮ বছরের মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির হার সবচেয়ে কম। সরকারি হিসেবও বলছে জুলাই থেকে মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু বাজারে এবং সংসারের খরচে তার প্রতিফলন মিলছে না বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, জিডিপি (GDP) ও মুদ্রাস্ফীতি নির্ধারণের ভিত্তিবর্ষ পাল্টে দেওয়া হবে। ২০১১-১২ অর্থবর্ষকে সরিয়ে ২০২২-২৩ ধরা হবে নতুন ভিত্তি, যা কার্যকর হবে ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে।
একই সঙ্গে বদল আসছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি নির্ধারণের প্রক্রিয়াতেও। বর্তমানে ৩০০টি পণ্যের দামে নির্ভর করে সূচক তৈরি হয়। এবার সেই তালিকা বাড়িয়ে অন্তত ৪০০ করা হবে। তবে কমিয়ে দেওয়া হবে খাদ্যপণ্যের অনুপাত, যা বর্তমানে ৪০ শতাংশের বেশি।
অর্থমন্ত্রকের মতে, খাদ্যের দাম আলাদাভাবে বাড়তে থাকায় সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধির হারও নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হচ্ছিল। খাদ্যের অংশ কমিয়ে দিলে সূচক অনেকটাই স্থিতিশীল থাকবে।