চৈতন্য মহাপ্রভুর স্মৃতিবিজড়িত ময়নাপাড়ায় পাঁচশো বছর ধরে আয়োজিত হচ্ছে রাসযাত্রা
বৈষ্ণব গ্রন্থে জায়গাটি বিশ্রামতলা নামে উল্লেখ রয়েছে। পরদিন সকালে দাঁতনের পথ ধরে পুরীর দিকে যাত্রা করেন।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বেলদা থানার ময়নাপাড়ায় প্রায় পাঁচশো বছর আগে এসেছিলেন চৈতন্য মহাপ্রভু। জানা যায়, চৈতন্যদেব এখানে রাত কাটিয়েছিলেন। জনশ্রুতি অনুযায়ী, ১৫১০ সাল নাগাদ যাত্রাকালে বেলদা থানার ময়নাপাড়া মৌজায় বিশাল বটগাছের তলায় তিনি রাত কাটান। এই ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর রাস উৎসব হয়। জানা গিয়েছে, চৈতন্যদেব সপার্ষদ পথের ক্লান্তি দূর করতে বড় দিঘির পাড়ে ময়নাপাড়ায় উপস্থিত হন। বৈষ্ণব গ্রন্থে জায়গাটি বিশ্রামতলা নামে উল্লেখ রয়েছে। পরদিন সকালে দাঁতনের পথ ধরে পুরীর দিকে যাত্রা করেন।
পুরী যাওয়ার একদিন নন্দ দাস নামে এক ভক্ত স্বপ্নাদিষ্ট হন। তিনি চৈতন্যদেবের মূর্তি গড়ে পুজো শুরু করেন। স্থানীয় জমিদাররা সেই পুজো করতেন। চলে আসছে সেই রাস উৎসব। বিখ্যাত হয়ে উঠেছে মহাপ্রভুর বিগ্রহ। গড়ে উঠেছে মন্দির। রাস উৎসবের সময় মাটির মূর্তি গড়ে চৈতন্যদেবের বিগ্রহ বটতলায় রেখে পুজো করা হয়। আজও ফি বছর কার্তিক মাসের একাদশী থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে রাস উৎসব। ১২ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে উৎসব। নগর সংকীর্তন ও নগর পরিক্রমা করে শুরু হয় রাস উৎসব। পাঁচ দিন চলে রাস মেলা।
ময়নাপাড়া রাস উৎসব কমিটি এই উৎসবের আয়োজন করে থাকে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড-সহ এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান। চৈতন্যদেব পুরীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন তখন মাঝে দাঁতনের কাকরাজিতেও থেমে ছিলেন। সেখানেও মন্দির ও বিগ্রহ আছে। রাস উৎসব হয়। প্রধান সেবাইতের কাঁধে চড়ে খোল কীর্তনের তালে মহাপ্রভুর নাচ এখানের বিশেষ আকর্ষণ। মানুষ উপভোগ করেন মহাপ্রভুর এই নৃত্য।