নজির! কোভিড পরিস্থিতিতেও ৪ লক্ষ বিয়ে হয়েছে বাংলায়

সংক্রমণ, উদ্বেগ, অর্থনাশ বা মৃত্যুর মতো জীবনের কঠিন দিকগুলির পাশাপাশি সম্পর্কের উদযাপনও হয়েছে বছরভর।

December 31, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

আজ, শুক্রবার ইংরেজি বছরের শেষ দিন। এই বছরটি কি শুধুই করোনার বছর ছিল? তথ্য বলছে, ২০২১ ছিল বিয়েরও বছর। প্রায় চার লক্ষ মানুষ এরাজ্যে চার হাত এক করেছেন। রেজিস্ট্রির সংখ্যা ১.৯ লক্ষ। ছাদনাতলায় সাতপাক ঘোরার খরচও হয়েছে দেদার। আর তাতে বাংলায় ব্যবসা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার।

সংক্রমণ, উদ্বেগ, অর্থনাশ বা মৃত্যুর মতো জীবনের কঠিন দিকগুলির পাশাপাশি সম্পর্কের উদযাপনও হয়েছে বছরভর। গত বছরও রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছিলেন প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বর-বধূ। আর রেজিস্ট্রির বাইরেও অসংখ্য মানুষ বিয়ে সেরে ফেলেছেন নেহাত চুপিসাড়ে। সব মিলিয়ে করোনাকালে বিয়ের সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে ৪ লক্ষ। তবে এই রেকর্ডের সঙ্গে তাক লাগিয়েছে শুধু বিয়ে উপলক্ষে গত এক বছরে বাংলায় ব্যবসার পরিমাণ। অঙ্কটা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। সমীক্ষা করে এমনই তথ্য দিচ্ছেন ব্যবসায়ীদের সর্বভারতীয় সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের কর্তারা। তাঁদের দাবি, বিয়ের অতিথি আপ্যায়ন, গয়না, পোশাক থেকে শুরু করে সর্বস্তরে যে খরচ হয়, তাতে জড়িয়ে থাকে বহু মানুষের রুটিরুজি। তাই বিয়ের সংখ্যা বৃদ্ধিতে কিছু মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। ফেডারেশনের মহাসচিব প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, গোটা দেশেই বিয়ের হার বেশ ভালো ছিল। এই শীতের লগনসায় তিন লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। এর অন্যতম কারণ, বিয়ের তারিখ বা লগ্ন এবার তুলনামূলক বেশি।’ করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও জানুয়ারির শেষ থেকে দোলপূর্ণিমা পর্যন্ত আবারও ভালো সংখ্যক বিয়ে হতে চলেছে বলে দাবি করেছেন প্রবীণবাবু।


কেন করোনার আতঙ্কের মধ্যেও এত মানুষ বিয়েতে উৎসাহী? কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক দেবদ্যুতি কর্মকার বলেন, ‘বিয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির বেশ কয়েকটি কারণ আছে। তার অন্যতম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা। করোনায় অনেকেই সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এছাড়া, করোনার আতঙ্কে এবং বাড়িতে মাসের পর মাস আটকে থেকে অনেকেই মানসিকভাবে একা হয়ে গিয়েছেন। বিয়ে তাঁদের কিছুটা সুরক্ষা দেবে বলে মনে করছেন তাঁরা। দ্বিতীয়ত, অনেক পাত্রপাত্রীই বিয়ের নানা সামাজিক আচার অনুষ্ঠান এড়িয়ে যেতে চান। করোনাকালে বিয়ে করলে অনুষ্ঠানে কাটছাঁট করা যায়। খরচও কমে। অনেকেই তার সুযোগ নিচ্ছেন।’ দেবদ্যুতিবাবুর কথায়, ‘রেজিস্ট্রির বাইরেও যে বহু বিয়ে করোনাকালে হয়েছে, তার খবর আমরা পাচ্ছি। তবে বেশিরভাগটাই আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মধ্যে। স্কুলছাত্রীদের বিয়ে তো লাগাতার হয়েছে। এক্ষেত্রে সেই সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তাই বড় কারণ। বয়স বা আইন নিয়ে মাথাব্যথায় রাজি নয় কেউ।’   

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen