বাবরি মসজিদে রামের আবির্ভাব – পড়ুন সেই ষড়যন্ত্রের ইতিহাস 

ভেতরের অংশ মসজিদ সংলগ্ন, বাইরের অংশে হিন্দুরা কাঠের মঞ্চে রামমূর্তির পুজো করেন।

August 5, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

উত্তর-প্রদেশ রাজ্যের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরে বাবরি মসজিদ, ১৫২৮ সালে বানিয়েছিলেন সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি। মসজিদের সামনে দেয়াল-ঘেরা মাঠটা মাঝখানে রেলিং দিয়ে দ্বিখণ্ডিত। ভেতরের অংশ মসজিদ সংলগ্ন, বাইরের অংশে হিন্দুরা কাঠের মঞ্চে রামমূর্তির পুজো করেন। 

বিহার থেকে ১৯৩৫ সালের দিকে সেখানে এসে আস্তানা গড়ে রামভক্ত সাধু অভিরাম দাস। তার দৃঢ় বিশ্বাস মসজিদের ভেতর মিনারের ঠিক নিচেই রামের জন্মস্থান। সেই জায়গাতেই রামকে পুনর্প্রতিষ্ঠিত করাটা তার জীবনের একমাত্র ব্রত। সেই সময় অযোধ্যার সিটি ম্যাজিস্ট্রেট গুরু দত্ত সিং। ফৈজাবাদে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ পেলেন গুরু দত্তের পুরোন বন্ধু কে কে নায়ার। দুজনই প্রচণ্ড রামভক্ত। গুরু দত্ত, কে কে নায়ার এবং অভিরাম দাস। এই ত্রয়ীর ষড়যন্ত্রে রূপায়িত হল এক কুনাটিকা।

অযোধ্যা। ২২শে ডিসেম্বর ১৯৪৯ বৃহস্পতিবার, রাত ১১টা। নিথর রাত। রুদ্ধশ্বাসে সন্তর্পনে হেঁটে যাচ্ছে তিন রাম-ভক্ত। দলনেতা সাধু অভিরাম দাসের চাদরের ভেতরে অষ্টধাতুর তৈরি রাম লালা-র ৭ ইঞ্চির মূর্তি। মসজিদের ভেতরে মিম্বরের ওপরে রেখে আসা হবে সেটা।

সেই কালরাত্রির ঘটনা সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে “অযোধ্যা: দি ডার্ক নাইট- দি সিক্রেট হিস্ট্রি অব রাম’স অ্যাপিয়ারেন্স ইন বাবরি মসজিদ” বইয়ে (প্রকাশক হার্পার কলিন্স, ইণ্ডিয়া) লেখকদ্বয় কৃষ্ণ ঝা ও ধীরেন্দ্রকে ঝা। বইটা আমাজনে কিনতে পাওয়া যায়। রইল বইয়ের কিছু উদ্ধৃতি:

“হিন্দু প্রহরী দুপুর থেকে মাঝরাত ও মুসলিম প্রহরী মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত পাহারা দিত। “আমি তাহাকে (হিন্দু প্রহরীকে) বুঝাইয়াছিলাম যে ইহা একটি এক্সট্রিম হলি ওয়ার্ক”- অভিরাম দাস। বিশ্বাসীদের মনে ‘হলি ওয়ার্ক’ স্বর্গের হাতছানিতে ঐশী কম্পন তোলে, হিন্দু প্রহরী রাজি হল তাদেরকে রাত্রে মসজিদে ঢুকতে দিতে। 

মুসলিম প্রহরীকে গুরু দত্ত ও নায়ার হুমকি দিয়েছিল সহযোগিতা না করলে তাকে খুন করা হবে। তাকেও রাজি হতে হল। সাধু অভিরাম দাস তাঁর দুই ভক্তকে নিয়ে রাত এগারোটায় মসজিদের কাছে পৌঁছতেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আবির্ভুত হল সাধু বৃন্দাবন দাস, হাতের রাম লালা’র মূর্তি তুলে দিল অভিরাম দাসের হাতে। 

পরের ঘটনা সংক্ষিপ্ত, কিন্তু তার প্রবল প্রভাব আজও আছে থাকবে চিরকাল। প্রহরী তালা খুলে দিলে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে অভিরাম দাস মসজিদে ঢুকে মিম্বরের ওপরে মূর্তিটি স্থাপন করে, তারপর ব্রহ্ম মুহূর্তের (কোন কোন মতে রাত ৩টা থেকে ৫টা) অপেক্ষা করতে থাকে। ঠিক রাত তিনটায় সে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর ঘণ্টা বাজিয়ে স্তোত্র পাঠ শুরু করে।”

এর পরের ঘটনাগুলো সবার জানা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen