প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের বম্ব শেল্টারই বাঁচাচ্ছে রুশ বোমার হাত থেকে, জানালেন কিভের ডাক্তারি পড়ুয়া
Russia Ukraine war: Bomb shelter built during cold war is now coming in handy at Ukraine

কয়েক দিনের মধ্যেই দ্রুত বদলে গেছে ইউক্রেনের রাজধানী শহর কিভ। স্বাভাবিক উপায়ে দেশে ফেরার পথও বন্ধ। গোটা ইউক্রেনে কার্যত বন্দি পড়ুয়া, ব্যবসায়ী বা চাকরি সূত্রে আসা সকলেই। সবাই আছেন ভারত সরকারের অপেক্ষায়। কিভযাপনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার গল্প শোনালেন কিভ মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া রানাঘাটের অভিদীপ দত্ত।
অভিদীপ দেশে ফেরার বিমানের টিকিট কাটার ঠিক পরেই যুদ্ধের ঘোষণা হয়। সমস্ত বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। বাতিল হয়ে যায় সব উড়ান।
হস্টেল থেকে দূরে নিপ্রো নদীর পূর্ব দিকে বোরিসপিলস্কা স্ট্রিটের একটা অ্যাপার্টমেন্টে এক কামরার ঘরে থাকেন এই বাঙালি ছাত্র। যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকে ঘরেই আছেন। তিনিই ওই অ্যাপার্টমেন্টে একমাত্র ভারতীয়। তবে বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে বা চ্যাটে সমানে যোগাযোগ রাখছেন সে কথাও জানান অভিদীপ। অনবরত যোগাযোগ রাখছেন ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও।
অভিদীপ জানান, জরুরি সব জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখে দিয়েছেন, যাতে যে কোনও মুহূর্তে বেরিয়ে পড়া যায়। তবে একা যাবেন না। বন্ধুরা দল বেঁধেই ফিরবেন দেশে। রানাঘাটের বাড়িতে রয়েছেন মা-বাবা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি।
যুদ্ধকালীন নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা সেই দেশে? অভিদীপ জানান, হস্টেলে কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট সর্বত্রই ‘বম্ব শেল্টার’ রয়েছে। সাইরেন বাজলেই বুঝতে হবে বিপদ। তখনই দ্রুত বেসমেন্টের সেই শেল্টারে চলে যেতে বলা হয়েছে। সে দেশে এমন শেল্টার শয়ে শয়ে আছে। শোনা যায়, সোভিয়েত ইউনিয়ন থাকাকালীন দেশে যখন ঠান্ডা লড়াই চলত, তখনই এ সব তৈরি হয়েছিল। এখন সে সবের ব্যবহার হচ্ছে।
এখন দেশে ফেরার একটাই উপায়, সড়ক পথে পশ্চিম ইউক্রেনে পৌঁছে সীমানা পেরিয়ে প্রতিবেশী চারটি দেশে যাওয়া। এর পরে পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া থেকে উড়ান ধরে দেশে ফেরা। তবে সেখান থেকে উড়ানে ফেরানোর কাজটা করাতে পারবে একমাত্র দূতাবাস। ইতিমধ্যেই দূতাবাসের তরফ থেকে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইউক্রেনে যাঁরা আছেন, তাঁদের সীমান্তের কাছে পৌঁছে যেতে। যাঁরা একটু দূরে আছেন, তাঁরা নিজেরা দিনের বেলায় যাত্রা করে পৌঁছতে পারেন। যেহেতু মার্শাল ল’ চলছে তাই রাতে না-বেরোনোর কথাই বলা হয়েছে।
কিভ হল উত্তর-মধ্য ইউক্রেন। সেখান থেকে পশ্চিম ইউক্রেনের সীমান্তে পৌঁছতে ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে সেটা ছাত্রদের পক্ষে ব্যক্তিগত ভাবে যাওয়া সহজ নয়। ওই দেশে যে স্টুডেন্ট এজেন্সিগুলো রয়েছে, ছাত্রদের ফেরানোর বিষয়ে তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে দূতাবাস। যথেষ্ট পরিমাণ, খাবার, জল এবং নগদ টাকা হাতে রাখতে বলা হয়েছে। সে ভাবে রেখেওছে অভিদীপরা। এখন শুধু প্রহর গোনা। কখন ফেরিয়ে নিয়ে যাবে নিজের দেশ।