রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া মানে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’! হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল বিশ্বভারতী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৪৫: বাংলা ভাষা নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আলোচনার কেন্দ্রে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান! এবার ‘আমার সোনার বাংলা’ গান ঘিরে নতুন বিতর্কে জড়ালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। প্রবীণ কংগ্রেস কর্মী বিধুভূষণ দাসের (Bidhu Bhusan Das) মুখে এই গান মঞ্চে পরিবেশিত হওয়ার পর, মুখ্যমন্ত্রী রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা (Treason case) রুজুর নির্দেশ দেন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati)।
শনিবার বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, প্রাক্তনী ও প্রবীণ আশ্রমিকরা একযোগে প্রতিবাদে সরব হন। তাঁদের প্রশ্ন, “এই গান তো ভারত রত্নপ্রাপ্ত লতা মঙ্গেশকরও গেয়েছেন। গেয়েছেন সুচিত্রা মিত্র, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিদেব ঘোষ, দেবব্রত বিশ্বাস, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়- তাহলে রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়া কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা?”
ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথের গান সবার জন্যই। সবাই গেয়ে থাকেন। আমরা এখনও সুখ দুঃখে এই গান গেয়ে থাকি। এটা যদি দেশদ্রোহিতা হয়, তাহলে সবাই আমরা দেশদ্রোহী।’’ বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ সুব্রত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ তো বিশ্ববন্দিত। তাঁর গান দেশ-বিদেশ সব জায়গায় গাওয়া যায়। কোথাও গাওয়া যাবে না এমন বিধিনিষেধ নেই। এমন ঘটনা অত্যন্ত আক্ষেপের।’’
প্রবীণ আশ্রমিক অপর্ণা দাস মহাপাত্র বলেন, “রবীন্দ্রসঙ্গীত যে কোনও জায়গায়, যে কোনও পরিস্থিতিতে গাওয়া যায়। দেশদ্রোহিতার সম্পর্ক খুঁজতে যাওয়া হাস্যকর।”* বিশ্বভারতীর পড়ুয়া বান্ধুলি কারার বলেন, “এই গান শুধু একটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত নয়, এটি মানবতার প্রতীক। যারা এই গান গাওয়াকে রাষ্ট্রদ্রোহ বলছেন, তারা মানবতার বিরোধী।”
বিজেপি (BJP) শাসিত অসমের (Assam) মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অসমের শাসক দলের নেতাদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশিষ্টজনেরা। বিশ্বভারতীর মতো কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানকে (Rabindra Sangeet) রাষ্ট্রদ্রোহিতা আখ্যা দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।