SIR হেল্পডেস্ক, রাজ্যজুড়ে ২৯৪টি ওয়ার রুম, নজরদারিতে বিধায়করা: ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বার্তা অভিষেকের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৪৬: এসআইআর (SIR) নিয়ে দলের সংগঠনকে কী করতে হবে, সে ব্যাপারে শুক্রবার ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে (Virtual Meeting) কয়েক হাজার জেলা, ব্লক ও রাজ্যস্তরের নেতা উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, গোটা রাজ্যে ২৯৪টি ওয়ার রুম খোলা হবে। প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় একটি করে এই ওয়ার রুম চলবে এবং তদারকির দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট বিধায়কের উপর। যেখানে বিধায়ক নেই, সেখানে ব্লক সভাপতি দায়িত্ব নেবেন।
অভিষেক স্পষ্টভাবে জানান, প্রতিটি ওয়ার রুমে পর্যাপ্ত ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সংযোগ এবং কম্পিউটার জানা অন্তত চার থেকে পাঁচজন কর্মী থাকতে হবে। নেতৃত্বের বার্তা, মাঠের পর্যায়ে গিয়ে ভোটারদের সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে দলীয় সংগঠনকে।
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। সেই সময় বাড়ি বাড়ি যাবেন কমিশন নিযুক্ত বুথ লেভেল অফিসাররা। তাঁদের সঙ্গে ছায়াসঙ্গী হয়ে কাজ করবেন তৃণমূলের ( TMC) বুথ লেভেল এজেন্টরা (Booth Agent)। প্রতিটি নাগরিকের এনুমারেশন ফর্ম (Enumeration form) পূরণে সহযোগিতা করতে হবে কর্মীদের, এমন নির্দেশই দেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “৯৯ শতাংশ নয়, ১০০ শতাংশ এনুমারেশন ফর্ম ফিলাপ করার দায়িত্ব বিএলএদের নিতে হবে।” সূত্র অনুযায়ী, বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বিএলএ-দের দায়িত্ব শুধু উপস্থিত থাকার নয়- তাদের উচিত বিএলও-দের সঙ্গে ছায়ার মতো সারাক্ষণ কাজ করা। তিনি সতর্ক করে দেন, এর মানে এই নয় যে শুরুতে দু’ঘণ্টা থাকলাম, তারপর দুপুরে খেতে গিয়ে আর ফিরলাম না। দায়িত্বে গাফিলতি বা ঢিলেমি একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।
এর আগে তিনি ৩ নভেম্বরের মধ্যে বিএলএ (BLA) ও বিএলএ-২দের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে কেউ কোনও সমস্যায় যাতে না পড়ে তার জন্য আগামী ৪ নভেম্বর থেকে SIR হেল্পডেস্ক চালু করছে তৃণমূল। নম্বরটি হল- ৮১৪২৬৮১৪২৬। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ৬২০০টি সহায়তা কেন্দ্র চালু থাকবে, যেখানে সাধারণ মানুষ এসআইআর (SIR) সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান পাবেন। অভিষেক বলেন, “কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি ভোটার তালিকায় চুপি চুপি কারচুপি করতে চাইছে। একজনও প্রকৃত ভোটারের নাম যাতে বাদ না যায়, তাই এই উদ্যোগ।”
এই পুরো উদ্যোগকে আরও গতিশীল ও ফলপ্রসূ করতে কর্মীদের উৎসাহিত করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগামী ছয় মাস আমাদের জন্য এক কঠিন পরীক্ষার সময়- একপ্রকার অ্যাসিড টেস্ট।” তিনি নির্দেশ দেন, যদি বিএলএ-রা কোনও সমস্যায় পড়েন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বিইআরএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। যেমন বিএলএ-রা বিএলও-দের ছায়াসঙ্গী হিসেবে কাজ করবেন, তেমনই বিআরএস-রা ইআরও এবং এইআরও-দের পাশে থেকে কাজ করবেন। জেলা স্তরে বিএলএ-ওয়ানদের প্রতিদিন ডিইও-র সঙ্গে সংযোগ রাখতে হবে, নিচুতলার যেকোনও সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। যদি কোনও জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে বিএলএ-ওয়ান সরাসরি নেতৃত্বকে অবহিত করবেন।
সূত্রের খবর, দলের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন, বিজেপির নির্দেশে ২৭ তারিখে বাংলায় এসআইআর (SIR) ঘোষণা করা হয়েছে। এটি একটি ‘সাইলেন্ট ইনভিজিবল রিগিং’ (Silent Invisible Rigging)। তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সংসদে, আদালতে এবং রাস্তায় এর প্রতিবাদ করেছে, ভবিষ্যতেও করবে। এই প্রক্রিয়ার ফলে রাজ্যে এক ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। টিটাগড়ে আরও একজন মহিলা আত্মহত্যা করেছেন। যদি প্রকৃত ভোটারদের (Voter) নাম বাদ পড়ে, তাহলে দিল্লিতে বড় আন্দোলন হবে। আমরা ইতিমধ্যেই অনেক এলাকায় নাম বাদ পড়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছি (গতকালের এক প্রেস কনফারেন্সে)। আমরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করব এই বিষয়েও।”