নতুন আলোর খোঁজে দিনবদলের ডাক, দক্ষিণ কলকাতার বেশ কিছু পুজো কমিটির ভাবনা

বর্তমান এই পরিস্থিতিতে অতি প্রয়োজন বিশুদ্ধ বায়ু এবং জল। এই প্রেক্ষাপটেই ‘আয়ুষ্মান ভবঃ’ উপস্থাপনায় শিব মন্দির পুজো কমিটির।

October 10, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নতুন আলোর খোঁজে দিনবদলের ডাক। একরাশ আশা নিয়ে শুরুটা হোক মায়ের আরাধনার মাধ্যমে। আবার ফিরে আসুক মুখ খোলা, হাতে হাত রেখে চলার দিনগুলি।‌ দুর্গা বন্দনায় দক্ষিণ কলকাতার এক ঝাঁক পুজো কমিটির ভাবনা আবর্তিত হয়েছে এই বিষয়টিকে ঘিরেই। 

লকডাউন শব্দটা এখন পরিচিত। ঘরবন্দি জীবন, ওয়ার্ক ফর্ম হোম, অনলাইন পড়াশোনা, চাকরি হারানো, স্বজন হারানোর বেদনা— অগুনতি ঘটনার সাক্ষী সমাজ। করোনা পর্বের একাধিক ঘটনা পুজোর আঙ্গিকে ফুটে উঠছে।  সমাজসেবী সংঘের ভাবনায়, ‘অন্য কুয়াশা’। দৈনন্দিন জীবনের গল্পগুলি মণ্ডপ চত্বরে নিয়ে আসছে তারা। চায়ের কাপ হোক বা কম্পিউটার, যেগুলির সঙ্গে এই ক’দিনে মানুষ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু সবটাই ধোঁয়াশা। তাই গল্পগুলিকে সাজানো হয়েছে জালের আস্তরণে। এখানেই মুক্তির খোঁজ দিতে পারেন দুর্গা মা। তাই তীব্র আলোর ছটা পড়ছে মায়ের মূর্তিতে। পুজো কমিটির কর্তা অরিজিৎ মৈত্র বলেন, এক সঙ্কটময় সময়ে দিশা দেবেন মা।

বর্তমান এই পরিস্থিতিতে অতি প্রয়োজন বিশুদ্ধ বায়ু এবং জল। এই প্রেক্ষাপটেই ‘আয়ুষ্মান ভবঃ’ উপস্থাপনায় শিব মন্দির পুজো কমিটির। মণ্ডপের বিভিন্ন অংশ জুড়ে দেখা যাবে মাস্কের ব্যবহার। যা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। থাকবে অক্সিজেনের সিলিন্ডার, স্যালাইনের বোতল, ভ্যাকসিনের ইনজেকশন সিরিঞ্জের ব্যবহার। ফুটে উঠবে পরিযায়ী শ্রমিকদের অবস্থার কথা। আবার রিকশা থেকে ঘোষণা হতে থাকবে সচেতনতার বার্তা। পুজো কমিটির কর্তা পার্থ ঘোষের কথায়, ‘এক-দেড় বছরের ঘটনার স্মৃতির রোমন্থন। নিকটজনের থেকে এখন মানুষের কাছে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মাস্ক আর স্যানিটাইজার। পুজো কমিটি তাদের উপস্থাপনায় এই বার্তাটাও দিচ্ছে, বিপদের সময় মানুষ ঈশ্বরকে আঁকড়ে ধরে। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে ঈশ্বরের মুখ চেয়ে মৃত্যু থেকে জীবনে ফিরে আসার চেষ্টায় আমরা ব্রতী হয়েছি।’

একই প্রেক্ষাপটে নতুন ‘আশা’র খোঁজে বাদামতলা আষাঢ় সংঘ। প্যান্ডেলে একাধিক জানালা। আর তা দিয়ে বাইরের দিকে মুখ বাড়াচ্ছেন মানুষজন। সামনে খোলা আকাশ। নতুন আশার খোঁজে অগণিত মুখ সেদিকেই তাকিয়ে। মণ্ডপের বড় অংশ জুড়েই নীল আকাশ চিত্রিত। মনে পড়বে সেই চেনা গান, ‘একদিন ঝড় থেমে যাবে/পৃথিবী আবার শান্ত হবে।’ মাতৃ প্রতিমার চালচিত্রেও তাই আকাশের উপস্থাপনা পুজো কমিটির। অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিস্থিতি পার করে আগামীর সময় সুন্দর হয়ে উঠবে বলে আশা কর্মকর্তাদের। সন্দীপ চক্রবর্তীর কথায়, ‘মানুষ সব সময় সুন্দর পৃথিবী চায়। সেটাই আমাদের পুজোর ভাবনা।’ 
সোনাঝুরির হাট আমরা আবার বসবে নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিটে।

তাই উৎসবকে সরিয়ে রেখে এবার শুধুমাত্র ‘পুজোর জন্য পুজো’ করছে মুদিয়ালি ক্লাব। ৫০ শতাংশেরও বেশি বাজেট কমিয়েছে তারা। কর্মকর্তা অশোক দে বলছেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধকে চালিয়ে যেতেই শক্তির আরাধনা। তাই এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কোনও আড়ম্বর নয়, নিয়ম রক্ষার্থেই পুজো হবে।’ সাবেকি প্রতিমা। রাজস্থানের একটি মন্দিরকে শিল্প নৈপুণ্যে উপস্থাপনা। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য মণ্ডপের অবস্থান কিছুটা বদলানো হয়েছে।

চেনা ছক এবার ভাঙছে ৬৬ পল্লী। পুজোর দায়িত্বে এবার চার জন মহিলা। নন্দিনী, সেমন্তী, রুমা, পৌলমী। এই প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়ে লখনউতে কালীপুজো ও মেদিনীপুরে সরস্বতী পুজোর জন্য আবেদন এসেছে বলে জানান পুজো কমিটির কর্তা প্রদ্যুমান্না মুখোপাধ্যায়। নারী সম্মানে ষষ্ঠীর দিন পুজো কমিটি সম্মান জানাচ্ছেঅটো ড্রাইভার, বাস চালক‌ সহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত মহিলাদের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen