শুভেন্দুকে তীক্ষ্ণ আক্রমণ করে শোভন কি তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন? দেখুন ভিডিও

ভিডিয়ো বার্তায় শোভন বলেন, রাজনীতি করতে নেমে ইতিহাসকে বিকৃত করছেন উনি।

October 10, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রবিবার লক্ষ্মীপুজোয় অধিকারী পরিবারের আমন্ত্রণ পেয়ে কাঁথির শান্তিকুঞ্জে গিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে পাশে নিয়েই রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাড়ির সামনে হাজির হওয়া সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলনেত্রী এই বাড়ি থেকে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এই বাড়িতে (শান্তিকুঞ্জ) ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামের ঘটনা ঘটেছিল। ২০০৮ সালের ১৩ মার্চ এই বাড়ির (শান্তিকুঞ্জ) ছাদে ছিলেন রাতে। নন্দীগ্রাম না হলে দিদি থেকে দিদিমা হয়ে যেতেন কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না।’

এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায় তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানন। বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে রাজস্থানে বসে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে চোখাচোখা আক্রমণ শানালেন শোভন। ফেসবুকে ভিডিয়ো পোস্ট করে শোভন জানান, নন্দীগ্রামের ঘটনাটি যে দিন ঘটে, সে দিন তিনি ছিলেন তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে। শান্তিকুঞ্জ অর্থাৎ শুভেন্দুর কাঁথির বাড়ি থেকে নন্দীগ্রামে যাওয়ার যে দাবি শুভেন্দু করেছেন, তা অসত্য।

ভিডিয়ো বার্তায় শোভন বলেন, ‘রাজনীতি করতে নেমে ইতিহাসকে বিকৃত করছেন উনি। এটা কখনওই মেনে নেব না। আমি ওই আক্রমণের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলার মানুষ জানেন সেদিন কী হয়েছিল। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ যেদিন নন্দীগ্রামে গুলি চলে, সেদিন আমি উপস্থিত ছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল ভবনে। সেটা নিশ্চয়ই শান্তিকুঞ্জ ছিল না। আমার মনে আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে জল…। ঝরঝর করে কাঁদছেন আর বললেন, ওরা সবাইকে মেরে ফেলল কানন, চল আমরা নন্দীগ্রামে যাই। বিকেল সাড়ে ৩টের সময় আমরা রওনা হয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মনে আছে রাত সাড়ে দশটার সময় আমরা কোলাঘাট থেকে চণ্ডীপুরের দিকে বাঁক নিতেই আমাদের গাড়ি আটকে দেওয়া হল। সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়ি। দেখলাম, চারপাশ থেকে আমাদের ঘিরে ধরেছে বহু মানুষ। তাদের হাতে গাঁইতি, কোদাল। তারা বলছে, পুলিশ, মিডিয়া এমনকি সহকর্মীদেরও যেতে দেওয়া হবে না। একমাত্র মমতা যেতে পারেন। এ দিকে ওঁরও জেদ, নন্দীগ্রাম যাবেনই। সে দিন আমিই এগিয়ে গিয়েছিলাম। পরিস্থিতি দেখেশুনে ওঁকে বলেছিলাম, আপনাকে ওরা মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। তাই কাউকে যেতে দেবেন না বলছে। আপনি ফিরে চলুন। সে দিন শুভেন্দু চণ্ডীপুরে আসেননি কেন? কোথায় ছিলেন তিনি? নিজেকে তিনি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের হোতা বলে দাবি করেন!’’

শুভেন্দু অধিকারীকে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানিয়ে ভিডিওতে শোভন বলেছেন, ‘‘আমি-আপনি সব ওঁরই হাতে তৈরি। মনে রাখবেন, সৃষ্টি যদি স্রষ্টাকে অপমান করে, তবে স্রষ্টার কিছু যাবে আসবে না। মানুষ সব দেখছেন তাঁরাই বুঝিয়ে দেবেন।’

সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি পোষ্ট করার পর বাংলার রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, চুয়াল্লিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে শোভনের সিংহভাগই কেটেছে মমতার সঙ্গে। তাই বিজেপি ছেড়ে আবারও তাঁর তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই ভিডিওটি সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen