সেট-এর প্রশ্ন হোক বাংলা ভাষাতে, ইউজিসিকে প্রস্তাব দেবে রাজ্য কলেজ সার্ভিস কমিশন

কমিশনের চেয়ারম্যান দীপককুমার কর বলেন, বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠায় আমরা এই প্রস্তাব ইউজিসির কাছে রাখব। বাকিটা তাদের বিষয়।

January 18, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

কলেজ সার্ভিস কমিশনের স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্টের (State Eligibility Test) (সেট) প্রশ্নপত্র ইংরেজির পাশাপাশি হতে পারে বাংলাতেও। পরীক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে কমিশন এবার সেই প্রস্তাব রাখতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) কাছে। পরীক্ষাটি রাজ্যের কলেজ সার্ভিস কমিশন নিলেও এর নিয়ামক সংস্থা ইউজিসি। কমিশনের চেয়ারম্যান দীপককুমার কর বলেন, বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠায় আমরা এই প্রস্তাব ইউজিসির কাছে রাখব। বাকিটা তাদের বিষয়।

ইউজিসির ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (National Eligibility Test) বা নেট-এর মতোই সেট-এ উত্তীর্ণরা দু’টি সুযোগ পান। লেকচারারশিপে উত্তীর্ণ হলে কলেজে সহ-অধ্যাপক হিসেবে ইন্টারভিউ দিতে পারেন। জুনিয়র রিসার্চ ফেলো হতে পারলে পিএইচডি করার জন্য স্কলারশিপ পান। সেট-এ বহু রাজ্যেই ইংরেজির পাশাপাশি স্থানীয় ভাষায় পরীক্ষা দিতে পারেন প্রার্থীরা। তবে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ ছিল না। এর ফলে বিভিন্ন মহলের দাবি ছিল, বাংলা ভাষার প্রশ্নপত্রও রাখা হোক। না-হলে, এখানকার ছাত্রছাত্রীরা পিছিয়ে পড়ছেন। ‘বাংলা পক্ষ’ সংগঠনের তরফেও দাবি জানানোর পাশাপাশি প্রায় ১৪টি রাজ্যের প্রশ্নপত্রের প্রমাণ সহ দীপককুমারবাবুর কাছে পাঠানো হয়েছিল।

চেয়ারম্যান জানান, সেট নেওয়ার জন্য প্রতি তিন বছর অন্তর ইউজিসির অ্যাক্রেডিটেশন সার্টিফিকেট নিতে হয়। এবছরই তা নেওয়ার সময়। তা জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে পাওয়া যাবে। এর জন্য পরিদর্শনেও আসবে ইউজিসির প্রতিনিধি দল। সেই সময়ই এই দাবি জানানো হবে। দাবি জানাতে সম্মত হলেও এর যৌক্তিকতা এবং মঞ্জুরির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের মনেই। তিনি বলেন, আমার কাছে যেসব রাজ্যের উদাহরণ দিয়ে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল, সেগুলির ব্যাপারে আমি খোঁজ নিই। পরে দেখি ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া রাজ্যগুলির ব্যাপারে এই দাবির সত্যতা নেই। তাছাড়া, এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরিতে যুক্ত থাকেন অনেক ভিন রাজ্যের অধ্যাপক। তাঁরা ইংরেজিতেই প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। সেক্ষেত্রে তো মডারেশনের পর কাউকে দিয়ে অনুবাদ করিয়ে নেওয়া যায়। তিনি এর পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, সেক্ষেত্রে প্রশ্নের গোপনীয়তা থাকবে না। আরও একজন প্রশ্ন জেনে যাবেন। তিনি আরও যুক্তি দেন, এই পরীক্ষা স্নাতকোত্তর পরবর্তী স্তরের। কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই স্নাতকোত্তরে বাংলায় প্রশ্নপত্র হয় না। বিশেষ করে বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে। তাই এটা কতটা প্রয়োজনীয়, সেই প্রশ্নও উঠতে পারে।

তবে, চেয়ারম্যানের দাবি খণ্ডন করছেন ‘বাংলা পক্ষ’-এর অন্যতম সংগঠক কৌশিক মাইতি। তিনি বলেন, প্রমাণ ছাড়া কোনও দাবিই জানাইনি। বিহার, তামিলনাড়ু, মহরাষ্ট্র, গুজরাত, কর্ণাটক সহ যেসব রাজ্যের নাম করা হয়েছে, সেগুলির প্রশ্নপত্রও ডাউনলোড করে পাঠিয়েছি। কৌশিকের প্রশ্নে দেখা গিয়েছে, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু বা মহারাষ্ট্রর মতো রাজ্য ইতিহাস বা অর্থনীতির প্রশ্ন স্থানীয় ভাষাতেও রেখেছে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী এবং ইতিহাসের পিএইচডি গবেষক মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, আমরা ইতিহাসেও স্নাতকোত্তরে ইংরেজি ভাষার প্রশ্নেই পরীক্ষা দিয়েছি। তবে, এটাও ঠিক, সেট-এ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও বসেন। বাংলায় প্রশ্নপত্র থাকলে তাতে তাঁরা অনেক বেশি লাভবান হবেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen