মার্চ মাসে চালু হবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের সুপার স্পেশালিটি ব্লক
রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় শনিবার সেই কাজ পরিদর্শন করেন।

আগামী মার্চ মাস থেকে চালু হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন সুপার স্পেশালিটি ব্লক। আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা যুক্ত এই ব্লক চালু হলে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের মানুষকে চিকিৎসার জন্য কথায় কথায় আর বাইরে যেতে হবে না। সেইসঙ্গে বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতিও মানুষের নির্ভরতা কমবে বলে আশা সরকারি চিকিৎসক মহলের। পূর্ণাঙ্গ নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, ইউরোলজি, পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড, বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি সবই থাকবে এই সুপার স্পেশালিটি ব্লকে। যার জন্য অনেকদিন আগেই ২৫ কোটি টাকার অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে পড়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনায় ২০১৪ সালে এই সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় শনিবার সেই কাজ পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, এই সুপার স্পেশালিটি ব্লক নির্মাণের বরাত প্রথমে যে সংস্থা পেয়েছিল তারা ধীরগতিতে কাজ করছিল। তাই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চ মাসে নতুন বরাত পাওয়া সংস্থা সেই কাজ শুরু করে। এখনও প্রায় ২৫ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। আগামী মার্চ মাসে উদ্বোধন করা হবে। তার আগে যাতে কাজ শেষ হয়, সেজন্যই এদিন সবকিছু ঘুরে দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপার স্পেশালিটি ব্লকের কাজের অগ্রগতি নিয়ে এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কনফারেন্স হলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আধিকারিকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্মাণ বিভাগের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সারেন সুশান্ত রায়। তিনি জানান, সুপার স্পেশালিটি ব্লক চালু হলে নিউরো, নেফ্রো, প্লাস্টিক সার্জারি, ক্যাথল্যাব সহ কার্ডিওলজি বিভাগের অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পাবে আমজনতা। সবররকম হৃদরোগের চিকিৎসা তখন এখানে হবে। কার্ডিওলজি বিভাগে ২০টি, ডায়ালিসিস ওয়ার্ডে ১৫, নেফ্রোতে ২২, প্লাস্টিক সার্জারিতে ২০, পেডিয়াট্রিকে ২২, আইসিসিইউ বিভাগে ১০টি বেড থাকবে। চার তলায় থাকবে ছয়টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার। থাকবে বার্ন ওয়ার্ড। একতলায় থাকবে ২১টি ওপিডি। এর পাশাপাশি সিটি স্ক্যান, এমআরআই, অত্যাধুনিক প্যাথলজিকাল ল্যাব, এক্স-রে সব উন্নত পরিষেবা এখান থেকে পাবে সর্বস্তরের মানুষ।
সুশান্ত রায় বলেন, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এই সুপার স্পেশালিটি ব্লক গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষের ভরসা হয়ে উঠবে। তখন আর অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার জন্য এখানকার গরিব মানুষকে সম্পত্তি বিক্রি করে সর্বস্ব হারাতে হবে না। এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকদিন আগেই অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম এখানে এসে পড়ে রয়েছে। যার অনেকগুলির প্যাকেটই খোলা হয়নি। অব্যবহৃত অবস্থায় এতদিন পড়ে থাকার পর সেগুলির ওয়ারেন্টির সময় শেষ হলে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বেড়ে যাবে। তার থেকেও বড় কথা আদৌ সব সরঞ্জাম ঠিক আছে কি না, সেটাও দেখার বিষয়।