পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায়-আত্মহত্যা রুখতে নয়া নির্দেশিকা সুপ্রিম কোর্টের
সম্প্রতি দেশে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চাপ সহ্য করতে না পেরে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উত্তরোত্তর বাড়ছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:০০: সম্প্রতি দেশে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চাপ সহ্য করতে না পেরে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উত্তরোত্তর বাড়ছে। একদিকে বাড়ির লোকের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। অন্যদিকে, অতিরিক্ত ভাল ফলের ইঁদুরদৌড় মানসিকভাবে অনেক মেধাবীও হজম করতে পারছেন না। আর সেই কথা উল্লেখ করে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘এটি পদ্ধতিগত ব্যর্থতা যা উপেক্ষা করা যায় না।’
শুক্রবার বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ দেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার, প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি এবং হস্টেলের জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে। আদালতের এই নির্দেশিকাগুলি আনুষ্ঠানিক আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের আইন হিসেবে গণ্য করা হবে।সুপ্রিম কোর্ট এই রায়টি দিয়েছে ২০২৩ সালে জুলাই মাসে বিশাখাপত্তনমে এক নিট পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার মামলায়।আকাশ বাইজু’স ইনস্টিটিউটে মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি চলাকালীন ১৭ বছর বয়সি ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করেন। আদালত পড়ুয়ার বাবার আবেদনের ভিত্তিতে এই মামলার তদন্ত সিবিআই-কে দেয়। একই সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয়।
জয়পুর, কোটা, সিকর, চেন্নাই, হায়দরাবাদের মতো শহরগুলি, যেখানে হাজার হাজার পড়ুয়া উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে পড়তে যান, তাদের বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারগুলি এবং জেলা প্রশাসনগুলিকে বেঞ্চের নির্দেশ, নিয়মিতভাবে পড়ুয়াদের সঙ্গে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং পড়ুয়া ও বাবা-মায়ের মানসিক উদ্বেগ কাটাতে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা কাউন্সেলিং করাতে হবে। যাতে তাঁরা নিশ্চিন্ত ও নিরুদ্বেগে থাকতে পারেন। পড়ুয়াদের অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি ও অভিযোগ সম্পর্কে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। এমনকী সরকারি শিক্ষা দফতরকে শিক্ষা কাঠামো ও শিক্ষাবর্ষের পরিকল্পনা নিয়ন্ত্রণ করে দিতে হবে। যাতে কোনও পড়ুয়ার উপর অত্যধিক চাপ সৃষ্টি না করা হয়, তার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে।
এছাড়াও আত্মহত্যা প্রতিরোধ হেল্পলাইন নম্বর ক্যাম্পাস, হোস্টেল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটগুলিতে আপলোড করতে হবে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বছরে কমপক্ষে দুবার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। আবাসিক হোস্টেলগুলিকে অবশ্যই টেম্পার-প্রুফ সিলিং ফ্যান ইনস্টল করতে হবে এবং ছাদ, বারান্দায় প্রবেশাধিকার সীমিত করতে হবে।