বেকারত্ব নিয়ে তেমনই উদ্বেগের সুর সুপ্রিম কোর্টের গলায়, মোদী সরকারকে দিল কড়া বার্তা

সোমবার মূলত তাদের জন্য এই পদক্ষেপের কথা বললেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

December 12, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বেকারত্ব নিয়ে তেমনই উদ্বেগের সুর সুপ্রিম কোর্টের গলায়। মোদী সরকারকে দেওয়া হল কড়া বার্তা, ‘আর কতদিন ফ্রিতে রেশন দেওয়া হবে? কেন আমরা চাকরি বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছি না? বিনামূল্যে রেশন নয়, চাকরির ব্যবস্থা করুন!’

মামলাটি অবশ্য পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত। সোমবার মূলত তাদের জন্য এই পদক্ষেপের কথা বললেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গত দু’বছর ঘটা করে রোজগার মেলা করলেও বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতির ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪-’২২, মোদী জমানার এই আট বছরে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির জন্য ২২ কোটিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছেন মাত্র ৭ লক্ষ ২২ হাজার জন। ডোম, শিক্ষাকর্মীর মতো গ্রুপ ডি পদে চাকরির জন্য হাজার হাজার পিএইচডি ডিগ্রিধারী আবেদনের কথা অহরহই শোনা যায়। দিনকয়েক আগে জম্মু-কাশ্মীরে পুলিস কনস্টেবলের নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাত্র চার হাজার শূন্যপদের জন্য আবেদন জমা পড়েছে সাড়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি।

এই উদাহরণগুলিই বুঝিয়ে দেয় দেশজুড়ে বেকার যুবক-যুবতীদের জ্বালা। ধুঁকছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থাগুলিও। ফলে সেখানেরও কর্মসংস্থান সেঅর্থে বা‌ড়ছে না। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)-র পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৫.৪৪ শতাংশ। চলতি অর্থবর্ষের নভেম্বরে তা দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। সম্ভবত এই প্রেক্ষিতেই এদিন সুপ্রিম কোর্টে পরোক্ষে খোঁচা খেতে হল মোদী সরকারকে।

২০২০ সালে কোভিডের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। যোগ্য ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বরের মধ্যে রেশন কার্ড দেওয়ার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চে। এজলাসে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, বর্তমানে দেশের ৮১ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে ও ভর্তুকিতে রেশন দেওয়া হচ্ছে। যদিও আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বক্তব্য ছিল, এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছেন আরও ২ থেকে ৩ কোটি মানুষ। বিনামূল্যে রেশন প্রাপকের সংখ্যা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদ্বয় বলেন, করোনার মতো সঙ্কটের পরিস্থিতিতে অভাবী মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু আর কতদিন বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে? দীর্ঘদিন এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে রেশন দিতে গিয়ে বিপুল বোঝা চাপছে সরকারের কাঁধে। পরিবর্তে নয়া কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। ৮ জানুয়ারি এর পরবর্তী শুনানি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen