হলদিয়ার জোড়া মন্দিরের রাস উৎসব শিল্পশহরে হারিয়ে যাওয়া নানা গ্রামের উদ্বাস্তু মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়
আজ রাধামাধবচকের অস্তিত্ব না থাকলেও সেই স্মৃতি বহন করছে জোড়া মন্দির ও কুমারচক উত্তরপল্লির জি-ব্লকের উদ্বাস্তু মহল্লা।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জোড়া মন্দিরের রাস উৎসব ও মেলা হলদিয়া শিল্পশহরে হারিয়ে যাওয়া নানা গ্রামের উদ্বাস্তু মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এই মন্দির গড়ে তোলার একটি ইতিহাস রয়েছে। কুমারচকের কাছেই হুগলি নদীর তীরে রাধামাধবচক মৌজা ছিল। সেখানে নন্দীগ্রাম থেকে এসেছিলেন দাস অধিকারী পরিবারের পূর্বপুরুষরা। তাঁরা রাধাকৃষ্ণের পুজো করতেন। শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের জেরে রাধামাধবচক মৌজার অস্তিত্ব মুছে যায়। শতাধিক উদ্বাস্তু পরিবার কুমারচকে উঠে আসেন। আজ রাধামাধবচকের অস্তিত্ব না থাকলেও সেই স্মৃতি বহন করছে জোড়া মন্দির ও কুমারচক উত্তরপল্লির জি-ব্লকের উদ্বাস্তু মহল্লা।
এখানকার রাস উৎসব এবার তৃতীয় বর্ষে পড়েছে। মন্দির কমিটির সভাপতি শত্রুজিৎ দাস, যুগ্ম সম্পাদক উত্তম দাস অধিকারী এবং রবীন্দ্রনাথ দাস অধিকারী জানালেন, রাধামাধবচক থেকে উদ্বাস্তু হলেও তাঁরা গ্রামের স্মৃতি ভুলে যাননি। তাই রাধামাধবের মন্দির তৈরিতে উদ্যোগী হন। হলদিয়ার মানুষের সাহায্যে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচে মন্দির তৈরি হয়েছে।
রাজস্থান থেকে পাথরের রাধাকৃষ্ণ মূর্তি আনা হয়। রাধাকৃষ্ণের মন্দিরের পাশেই নীলকণ্ঠ মন্দির গড়ে তোলা হয়। সেখানে পুজো পান মহাদেব। এই জোড়া মন্দিরে নিত্যপুজো হয়। বেলা ১১টায় ভোগ নিবেদনের পর তা ভক্তদের দেওয়া হয়। ২০২২ সাল থেকে রাস উৎসব ও মেলা শুরু হয়েছে। মন্দির কমিটির যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ মোহন দাস ও শ্যামপদ ভুঁইয়া বলেন, এবছর রাস উৎসবের বাজেট প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। হলদিয়া বিধানসভা এলাকায় একমাত্র এই মন্দিরেই বড় আকারে রাস উৎসব হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় উৎসবের সূচনা করেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামী দীননাথানন্দ মহারাজ। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কার্তিকচন্দ্র দাস অধিকারী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।