‘অপরাজিতা বিল’ আটকে RG Kar আন্দোলন! বিজেপির দ্বিচারী ভূমিকা নিয়ে সরব তৃণমূল সাংসদ

তিনি আরও বলেন, “বিজেপি চায় দেশের মহিলা ভয়ে থাকুক, আর ধর্ষকরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াক। এটাই তাঁদের আসল চরিত্র।”

August 9, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪৩: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যার একবছর পূর্তিতে কেন্দ্রের ভূমিকা ও নারী সুরক্ষা আইন নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল। শনিবার যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “এক বছর আগে ঘটে যাওয়া এই নৃশংস ঘটনা শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা দেশকে ব্যথিত করেছিল। সেই ঘটনার পর থেকে আমাদের দল, নেতৃত্ব, সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী নির্যাতিতার পরিবারের পাশে আছেন।”

সায়নী জানান, নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে ‘অপরাজিতা অ্যান্টি রেপ বিল’ পাস হয়। এই বিলে ধর্ষণ ও ধর্ষণ-খুনের মতো অপরাধে মৃত্যুদণ্ড, নিরপেক্ষ তদন্ত, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ফাস্ট ট্র্যাক ট্রায়াল কোর্টের প্রস্তাব ছিল।

তাঁর অভিযোগ, “অযৌক্তিক ও তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে কেন্দ্র এই বিল ফেরত পাঠিয়েছে। এর মাধ্যমে বিজেপি প্রমাণ করেছে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ তাঁদের কাছে শুধু লরি-ট্রাকের পিছনে লেখা স্লোগান।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর ছোট ছোট চৌকিদাররা বিচার চান না। তাঁরা নাটক চায়। ‘অপরাজিতা বিলের’ মতো একটি দৃষ্টান্তমূলক বিলকে আঁটকে দিয়ে বিজেপি বুঝিয়ে দিয়েছে দেশের মহিলা ভয়ে থাকুক, আর ধর্ষকরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াক। এটাই তাঁদের আসল চরিত্র।”

সূত্রের খবর, বিলটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলেও দীর্ঘ সময় পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একে ‘অতি কঠোর’ আখ্যা দেয়। রাজভবন সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণ-খুনের ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা ‘অতিরিক্ত নিষ্ঠুর’ বলে মনে করেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, কিছু ধারা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার পরিপন্থী বলে মত দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁদের দাবি, বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অতীতে নারী নির্যাতনের অভিযোগ থাকায় ‘অপরাজিতা বিল’ কার্যকর হলে তাঁদের আইনি জটিলতায় পড়তে হতে পারে। শাসকদলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক ইচ্ছে করেই বিল আটকে দিয়েছে এবং রাজ্যপালকে তা ফেরত পাঠাতে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিয়েছে।

গত আগস্টে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যার ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নারী সুরক্ষায় কঠোরতম আইন আনার সিদ্ধান্ত নেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিধানসভায় পাস হয় ‘অপরাজিতা বিল’। রাজ্যপালের অনুমোদন পেলেই তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় আপত্তির কারণে বর্তমানে তা অনিশ্চয়তায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, মোদী সরকারের আমলে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দণ্ডিত ডেরা সাচা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিং মঙ্গলবার ৪০ দিনের প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন। এটি তাঁর ১৪তম অস্থায়ী মুক্তি, মোট ৩২৬ দিন জেলের বাইরে কাটিয়েছেন তিনি। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, বিজেপি সরকারের আমলে কীভাবে ধর্ষণ ও খুনের মতো আসামি কেন বারবার মুক্তি পাচ্ছেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, একদিকে অপরাজিতা বিল’ আটকানো, অন্যদিকে ধর্ষকদের মুক্তি মানে মহিলা সুরক্ষা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের আনা অভিযোগই কী সত্য!

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen