আজ বইমলার শেষদিন, রয়েছে ব্যাপক ছাড়ের হাতছানি
গত বছর বইমেলা হয়নি বলে এবার ভিড়টা যেন একটু বেশিই।

বইয়ের দামে ১০ শতাংশ ছাড়। একটা সময় বইমেলায় এটাই ছিল নিয়ম। ২০-২৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট মিলত শুধু কলেজ স্ট্রিটে। সে সব দিন এখন অতীত। গত কয়েক বছর ধরেই কলকাতা বইমেলায় বেশিরভাগ স্টলে বই কেনা যাচ্ছে কার্যত কলেজ স্ট্রিটের দামে। অর্থাৎ ২০ শতাংশ ছাড়ে। আর এবার তো প্রায় সোনায় সোহাগা! কারণ, কিছু কিছু প্রকাশনী ও বইবিক্রেতার স্টলে মিলছে তার থেকেও বেশি ডিসকাউন্ট। ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। সৌজন্যে কোভিড বা বলা ভালো, বিশ্বব্যাপী মহামারী। গত বছর বইমেলা বন্ধ থাকার কারণে ‘স্টক ক্লিয়ারেন্স’-এর তাগিদ এবার বেশি। আজ, রবিবার ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার শেষ দিন। সেই উপলক্ষে বেশ কিছু প্রকাশনা সংস্থা বইয়ের দামে দিচ্ছে স্পেশাল ডিসকাউন্ট। ফলে শেষ দিনে বইপ্রেমীদের ঝুলি একটু বেশিই ভারি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
এবছর বিক্রির দিক থেকে রেকর্ড গড়েছে বইমেলা। অধিকাংশ স্টলেই খোঁজ নিলে শোনা যাচ্ছে, ‘যা টার্গেট ধরে ছিলাম, কবে পার করে ফেলেছি। সন্ধের দিকে দম ফেলার সময় পাচ্ছি না মশাই।
গত বছর বইমেলা হয়নি বলে এবার ভিড়টা যেন একটু বেশিই।’ বিক্রি বাড়াতে ডিসকাউন্টের দিকটিও মাথায় রাখছেন অনেকে। যেমন স্টুডেন্টস কর্নার। এরা মূলত অনলাইন বিক্রেতা। এখানে অনেক বইতে ছাড় ৫০ শতাংশ। স্টলে বসে থাকা তোফায়েল হোসেন জানাচ্ছেন, মূলত অনলাইনে ফেরত আসা বইতে বেশি ছাড় দিচ্ছি। বিক্রিও ভালোই হচ্ছে। দে’জ পাবলিশিং থেকে সাহিত্য একাডেমি কিংবা ধানসিড়ি, আত্মজা, বসাক বুক স্টোর—কোথাও শর্তসাপেক্ষে, কোথাও এমনিতে মিলছে ২০ শতাংশ ছাড়। কোথাও তার বেশিও। শেষ দিনে ডিসকাউন্ট আরও বাড়িয়ে লাভের মুখ দেখতে তৈরি আরও অনেকে। যেমন দীপ প্রকাশন, ধানসিড়ি, গুরুচণ্ডা৯ প্রকাশন, তবুও প্রয়াস, পরম্পরা কিংবা শপিজেন পারলিশার্স। বিশেষ ফেসবুক গ্রুপের সদস্যদের জন্য বইমেলায় আজ অতিরিক্ত ছাড় দিচ্ছে এদের মতো বেশ কিছু প্রকাশনা সংস্থা এবং লিটল ম্যাগাজিন। দেখাতে হবে শুধু গ্রুপের একটি নির্দিষ্ট পোস্টের স্ক্রিনশট।
যদিও অনেক বড় প্রকাশনাই এই স্রোতে গা ভাসায়নি। তাদের বইতে ছাড় ১০ শতাংশই। তবে অনেক স্টলে এর পাশাপাশি মিলছে উপহার। যেমন অমর চিত্রকথা। সংস্থার ইস্টার্ন রিজিয়ন ম্যানেজার অরিজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আমাদের পুরাণের বইয়ের বিক্রি বেশি। ১০ শতাংশই ছাড় দিচ্ছি। তবে নির্দিষ্ট বিলের উপর থাকছে বিভিন্ন উপহার।’ গিল্ড সভাপতি সুধাংশু শেখর দে অবশ্য জানাচ্ছেন, ‘বইমেলায় খাতায় কলমে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেওয়াই দস্তুর। তার বেশি দিলে তো ক্ষতির সম্ভাবনা। কেউ কেউ অবশ্য দিচ্ছেন। তবে সবাই নয়।’ সব মিলিয়ে শেষ দিনে আরও জমজমাট হতে চলেছে সেন্ট্রাল পার্ক বইমেলা প্রাঙ্গন।