চা শ্রমিকদের নিয়ে গেট মিটিং করবে তৃণমূল
চা বাগানে এই গেট মিটিং নিয়ে বুধবার আলিপুরদুয়ারে দলের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী ও দলের জেলা কোঅর্ডিনেটর প্রকাশ চিকবরাইক।

আগামী ২২ এবং ২৩ মার্চ আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) ৬৭টি চা বাগানে তৃণমূল কংগ্রেস গেট মিটিং করবে। বিধানসভা ভোটের মুখে একঘণ্টা করে চা বাগানগুলিতে তৃণমূলের এই গেট মিটিং হবে। তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারেই এই মিটিং করা হবে। তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, চা শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাঁওতাবাজির জবাব দেওয়া হবে। পাশাপাশি গেট মিটিংয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকার শ্রমিকদের জন্য কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করেছে তথ্য দিয়ে তার খতিয়ান তুলে ধরা হবে। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের এই গেট মিটিংকে পাত্তা দিচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, চা শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কী কী করেছে তা নিয়ে আলিপুরদুয়ারের ৬৭টি চা বাগানের ৭৫ হাজার শ্রমিক পরিবারের মধ্যে ইতিমধ্যেই তৃণমূল রিপোর্ট কার্ড বিলি করেছে। আদিবাসীদের আবেগ বীরসা মুণ্ডার ছবি সহ ক্যালেন্ডারও শ্রমিক পরিবারগুলির মধ্যে বিলি করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। চা বাগানে এই গেট মিটিং নিয়ে বুধবার আলিপুরদুয়ারে দলের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী ও দলের জেলা কোঅর্ডিনেটর প্রকাশ চিকবরাইক।
তৃণমূলের আদিবাসী মুখ চা শ্রমিক (Tea Workers) সংগঠনের নেতা প্রকাশবাবু বলেন, রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের জন্য এত উন্নয়ন করেছে যে শ্রমিকরা আর বিজেপির কথা শুনছেন না। তাই বিজেপি ডুয়ার্সে মিথ্যা প্রচার করছে, অসমে নাকি কেন্দ্রীয় সরকার চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২১৭ টাকা করেছে। এর থেকে বড় মিথ্যাচার আর হয় না। অসমে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২১৭ টাকা এখনও লাগু হয়নি। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি অসমে চা শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত এই মজুরি দিতে অপারগ সেখানকার চা মালিকরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুলবাবু বলেন, বিজেপির এই মিথ্যা প্রচারের জবাব দিতেই আমরা চলতি মাসের ২২ ও ২৩ তারিখ পর পর দু’দিন জেলার ৬৭টি চা বাগানে গেট মিটিং করব। বাগানের কাজ সচল রেখে শ্রমিকদের নিয়ে একঘণ্টা এই গেট মিটিং হবে।
রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সে (Duars) একে একে যেমন বন্ধ চা বাগান খুলেছে তেমনই চা শ্রমিকদের থাকার জন্য ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পে ঘর তৈরির কাজও শুরু করেছে। রাজ্য সরকার উত্তরের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৬৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২ টাকা করেছে। বন্ধ চা বাগানের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের ফাউলাইয়ের টাকাও বাড়িয়েছে। আবার সারাবছর বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছে। জয় জোহার প্রকল্পে ষাটোর্ধ্ব শ্রমিকদের জন্য প্রতিমাসে ১ হাজার টাকার মাসিক ভাতারও ব্যবস্থা করেছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুলবাবু বলেন, বিজেপির মিথ্যাচারের জবাব দিতে গেট মিটিংগুলিতে চা শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরা হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা অবশ্য বলেন, ২১৭ টাকা নয়, অসমের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি নির্ধারিত হয়েছে ৩০০ টাকা। ইতিমধ্যে এনিয়ে নোটিফিকেশন হয়েছে। কাজেই আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের ওই গেট মিটিংকে আমরা আদৌও কোনওরকম পাত্তা দিচ্ছি না।