পা দিয়ে খোলা হচ্ছে পাগড়ি, বাংলায় নয় পাঞ্জাবেই

এখন প্রশ্ন উঠছে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে ধর্মীয় উস্কানি দিতেই কি রচনা হয়েছিল গত সপ্তাহের বিজেপির পাগড়ির প্রতি শ্রদ্ধা?

October 15, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বিজেপি যুব মোর্চার ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। গত ৮ই অক্টোবর দুপুর থেকে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কলকাতা-হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উত্তেজিত সেই মিছিল আটকাতে কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন প্রান্তে সক্রিয় হয়ে ওঠে রাজ্যের পুলিশ। কিন্তু এরই মাঝে হাওড়া ময়দান থেকে যে মিছিলটি নবান্নের দিকে আসছিল, সেই মিছিলের এক বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে উদ্ধার হল অস্ত্র।

কিন্তু কে ওই বিজেপি কর্মী? ওই গ্রেপ্তার হওয়া যুবক বলবিন্দর সিং বিজেপি যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যের সঙ্গে ছিলেন দাবি করেছেন হাওড়ার পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল। পিস্তল-সহ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছেন আসানসোলের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার তথাগত পাণ্ডে।

পরে তদন্ত করে জানা যায় ঐ পিস্তলের লাইসেন্স ব্যক্তির নিজের নামে হলেও সেই পিস্তলটি জম্মু ও কাশ্মীরের রজৌরি জেলার বাইরে ব্যবহারের অনুমতি ছিল না। এখন হাওড়া পুলিশ তাকে আরও অনুসন্ধানের জন্য গ্রেপ্তার করে রেখেছে এবং পুলিশ এও জানান ঐ ব্যক্তি গুলি ছুঁড়তে যাওয়ার মুহূর্তে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেই বলবিন্দর সিংকে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় নেটদুনিয়ায়। এক সংবাদমাধ্যমের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বলবিন্দর সিংকে পাকড়াও করতে গিয়ে তাঁকে মারধর করছে পুলিশ। দুর্ভাগ্যবশত মারধর এবং ধস্তাধস্তির মধ্যে কোনওভাবে বলবিন্দরের পাগড়িটি খুলে যায়। এরপর বিজেপি শুরু করে এক ধর্মীয় উস্কানি। তারা প্রচার করে শিখ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে তাঁর পাগড়ি খুলে অপমান করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রদায়িক পুলিশ।

এরপর ক্রিকেটার হরভজন সিংয়ের একটি টুইটের পর কলকাতার রাস্তায় শিখ ধর্মাবলম্বী বিজেপি কর্মীর পাগড়ি খোলা নিয়ে হঠাতই বিতর্ক শুরু হয়। ক্রিকেটারের অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা জোর করে শিখ সম্প্রদায়ের ওই বিজেপি সমর্থকের পাগড়ি খুলে দিয়েছে। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ। খোদ হরভজন সিং এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।

যদিও রাজ্য পুলিশ পালটা এক টুইটে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। তাঁদের দাবি,”বিজেপির বিক্ষোভে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ওঁর পাগড়ি ধস্তাধস্তির সময় এমনিই খুলে পড়েছে। আমাদের আধিকারিক কখনওই পাগড়ি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করেননি। কোনও সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করাটা আমাদের অভিপ্রায় নয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সব ধর্মকে সম্মান করে। আমাদের আধিকারিক গ্রেপ্তারির আগে বারবার ওই ব্যক্তিকে পাগড়িটি ঠিক করে নিতে অনুরোধও করেছিলেন। আমরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।” নিজেদের টুইটে গ্রেপ্তারির ঠিক আগের মুহূর্তে তোলা বলবিন্দরের একটি ছবিও পোস্ট করেছে রাজ্য পুলিশ। যাতে তাঁকে একেবারে সঠিকভাবে পাগড়িটি পরে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

আজ পাঞ্জাব পুলিশের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে সেখানকার পুলিশ লাথি মেরে খুলে দিচ্ছে পাগড়ি। এখন প্রশ্ন উঠছে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে ধর্মীয় উস্কানি দিতেই কি রচনা হয়েছিল গত সপ্তাহের বিজেপির পাগড়ির প্রতি শ্রদ্ধা?

দেখুন সেই ভিডিও-

https://www.facebook.com/100014579023590/posts/962476060915019/?extid=0&d=n
TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen