হাথরসে ধর্ষণই হয়নি, দাবি যোগীর পুলিসের

তবে কি কারণে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে, তা পরিষ্কার করে জানানো হয়নি পোস্টমর্টেম রিপোর্টে।

October 2, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ধর্ষণ হয়নি। কারণ, ফরেন্সিকে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। উত্তরপ্রদেশের সরকারি বয়ান এটাই। বৃহস্পতিবার যোগীরাজ্যের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার স্বয়ং জানিয়েছেন, ‘ফরেন্সিক রিপোর্ট থেকেই পরিষ্কার, ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। মৃত্যু হয়েছে ঘাড়ে ও মেরুদণ্ডে আঘাত লাগার কারণে। পুলিসকে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই মহিলাও মারপিটের উল্লেখ করেছিলেন। ধর্ষণের কথা তিনি বলেননি। কিছু লোক অশান্তি ছড়াতে বিকৃতভাবে তথ্য পরিবেশন করছেন।’ তাহলে দ্বিতীয় এফআইআরে কেন ধর্ষণের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল? তরুণীকে কেন খুন করা হল? কেনই বা মধ্যরাতে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাঁর মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হল? এই সব প্রশ্নের উত্তর পুলিস দেয়নি। শুধু বলেছে, সাতদিনের মধ্যে তারা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেবে। তবে, মৃতদেহ গোপনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় রাজ্য পুলিসের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন।

শুধু ফরেন্সিকই নয়, দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের কোথাও ‘ধর্ষণ’ শব্দের উল্লেখ নেই। ওই হাসপাতালের চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, জীবিত অবস্থায় হাতরাসের নির্যাতিতাকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা হয়। এর জেরে তাঁর ঘাড়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ওই অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণও হয়েছিল। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মেরুদণ্ড। তিনি হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে কি কারণে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে, তা পরিষ্কার করে জানানো হয়নি পোস্টমর্টেম রিপোর্টে। শুধু বলা হয়েছে, ভিসেরা পরীক্ষার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

নির্যাতিতার মৃত্যুর পর রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। তাতে প্রলেপ দিতে এদিন মৃতার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন যোগী আদিত্যনাথ। এরপরই তরুণীর বাবা জানান, ‘উত্তরপ্রদেশ পুলিসের তদন্তে আমি খুশি। মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’ চমকের এখানেই শেষ নয়, নতুন মোড় নিয়েছে হাতরাসের ‘বয়ান রাজনীতি’। আর এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ উঠছে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে। তিনি নাকি লাগাতার হুমকি দিচ্ছেন। ধর্ষণ বা খুন নয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে—এমন বয়ান দেওয়ার জন্য চাপাচাপি শুরু করেছেন জেলাশাসক। এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার এক আত্মীয়া। তাঁর বক্তব্য, ‘ওঁরা বলছেন, করোনার কথা বললে টাকা মিলবে। না হলে আমাদের ক্ষতি হয়ে যাবে।’ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে ডিএম নির্যাতিতার পরিবারকে বলছেন, ‘মিডিয়ার লোকজন আজ আছে। কাল চলে যাবে। আমরা এখানেই থাকব। আপনারা বিবৃতি বদল করবেন কি না, তা ভেবে দেখুন। না হলে এরপর আমরাও অন্যভাবে ভাবনাচিন্তা করব।’

এরই মধ্যে নির্যাতিতাকে আলিগড়ের জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জেএনএমসির প্রিন্সিপাল শাহিদ আলি সিদ্দিকি বলেন, ‘ওই তরুণীকে দিল্লি এইমসে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু কেন তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল, বুঝতে পারছি না।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen