জলবন্দি শহরবাসী – সাহায্যে নয়, সমালোচনায় ব্যস্ত রাজ্য BJP?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৫০: সোমবার রাত থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টিতে নাকাল কলকাতাবাসী। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাস্তাঘাট, পাড়া-মহল্লা, এমনকি শহরের বহু পুজোমণ্ডপ হাঁটুসমান জলে ডুবে যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান অন্তত ১০ জন। তবে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও বিজেপির রাজ্য স্তরের কোনও নেতাদের দেখা গেল না সক্রিয়ভাবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে।
সমালোচকরা বলছেন, দুর্যোগের সময়ে মানবিক সহায়তার বদলে বিজেপি নেতারা সীমাবদ্ধ থেকেছেন সাংবাদিক বৈঠক আর সমাজমাধ্যমের পোস্টেই। মঙ্গলবার দুপুর থেকে জলমগ্ন এলাকায় কোথাও তাঁদের তৎপরতা দেখা যায়নি। উল্টে বিজেপির রাজ্য নেতারা সরকার ও পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সমালোচনায় সরব হয়েছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য সরকারের ‘দুর্নীতি’ এবং ‘দূরদৃষ্টিহীনতা’-কে দায়ী করেন। শুভেন্দু অধিকারীও নিজের জেলায় বসে মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কোনও সংগঠিত সাহায্যের উদ্যোগ দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে তাঁরা কর্ণপাত করেন নি ‘দুর্যোগকে সুযোগে পরিণত করা’-র মতো নরেন্দ্র মোদীর উপদেশও।
অন্যদিকে, কংগ্রেস, বামপন্থী নেতাদের একাংশকে দেখা গেছে জলমগ্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে, যদিও আর্থিক সাহায্য নয়, তবুও মানবিকতার নিদর্শন হিসেবে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন। এদিকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজের হাতে চেতলায় জল সরাতে নেমেছেন, মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়াও কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ এবং স্থানীয় থানার পুলিশও দিনভর বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধারকাজ চালিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপির নেতারা কেবল সমালোচনায় ব্যস্ত থেকেছেন, কিন্তু জনসংযোগের জায়গায় মাঠে নামার মানসিকতা নেই। উত্তর কলকাতার এক প্রবীণ বিজেপি নেতা স্বীকার করেছেন, সমাজমাধ্যম রাজনীতিকে সহজ করেছে বটে, কিন্তু মাঠে-ময়দানে থেকে কাজ করার শিক্ষা বিজেপি নেতৃত্ব হারাচ্ছে। এক প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, রাজনীতি বা সমালোচনার বাইরেও অনেক কিছু করার ছিল। অথচ কেউ কিছু করলেন না।