ফুটপাথে বাইক, রাস্তার দু-ধারে গাড়ি, কেন থামানো যাচ্ছে না বেআইনি পার্কিং?
পার্কিং বাবদ ঘণ্টা পিছু ১০ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না, সেখানে পার্কিং ফি’র নামে শহরের একাধিক জায়গায় দ্বিগুন টাকা বা তারও বেশি নেওয়া হচ্ছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শহর কলকাতায় ব্যাঙের ছাতার মত রমরমিয়ে চলছে অবৈধ পার্কিং। ফুটপাত বা লাগোয়া অংশ দিয়ে লোকজনের যাতায়াত দুস্কর হয়ে পড়ছে। খোদ কলকাতা পুরনিগমের নিজস্ব তথ্যই সেই কথা বলছে। শহরের বহু রাস্তা বেআইনি পার্কিংয়ের দখলে চলে গিয়েছে। জানা গেছে, প্রতিটি বেআইনি পার্কিং লট নিয়ন্ত্রণ করছে ক্ষমতায় থাকা দলের ইউনিয়নগুলি।
অবৈধ পার্কিং-এর কারণে কলকাতার যানজট যেমন বাড়ছে, তেমনই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলতে হচ্ছে নিত্য পথযাত্রীদের। জানা গেছে, সকাল থেকে রাত, এই বেআইনি পার্কিং লটগুলিতে লরি থেকে মিনিডরে ভর্তি থাকে। যাঁরা গাড়িগুলি পার্কিং করছেন তাঁরা টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু, সেই টাকা আসছে না পুরসভার ভাঁড়ারে। স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তিতে নেই পার্কিং বিভাগের আধিকারিকরা। যেখানে পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, পার্কিং বাবদ ঘণ্টা পিছু ১০ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না, সেখানে পার্কিং ফি’র নামে শহরের একাধিক জায়গায় দ্বিগুন টাকা বা তারও বেশি নেওয়া হচ্ছে।
শহরের রাস্তায় যত্রতত্র বেআইনি পার্কিং নিয়ে মানুষের অভিযোগের কোনও সুরাহা হয়নি। এ ব্যপারের রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশ শুধুমাত্র খাতায়-কলমেই রয়ে গিয়েছে। পার্কিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুর, নিউ আলিপুর, টালিগঞ্জ, পার্ক স্ট্রিট, ধর্মতলা, বড়বাজার, ক্যানাল ইস্ট রোড, ক্যানাল ওয়েস্ট রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, বি টি রোড, কাশীপুর রোড, চিড়িয়ামোড়, লেক মলের কাছে রাসবিহারি অ্যাভিনিউ, পরমহংস দেব রোড, গড়িয়াহাট রোড, রাজা রামমোহন রায় সরণি, আর এন মুখার্জি রোড, কিরণশঙ্কর রোড, জাস্টিস চন্দ্র মাধব রোড, আলিপুর রোড, চাঁদনি চক স্ট্রিট, কুপার স্ট্রিট, হরিশ মুখার্জি রোড, পণ্ডিতিয়া রোড, চক্রবেড়িয়া নর্থ, বেলতলা রোড, মাইসোর রোড, ডোভার লেনসহ অনেক জায়গাতেই পুরসভার বেঁধে দেওয়া ফি’র তুলনায় অনেক বেশি টাকা নেওয়া হয়় বলে অভিযোগ। লালবাজারের একাংশের অভিযোগ, শাসকদলের দাপুটে নেতারা নিয়ন্ত্রণ করেন এই পার্কিং লটগুলি। রাজনৈতিক চাপ থাকে। সে কারণে অনেক সময় পুলিশ কিছু করতে পারে না।
কলকাতা পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, পার্কিং করা গাড়িগুলিতে পুরসভার স্লিপ লাগাতে হবে বা রশিদ থাকতে হবে। কিন্তু বেআইনি পার্কিং লটের গাড়িতে নম্বর লিখে দেওয়া হচ্ছে। পার্কিং করা গাড়িগুলিতে কোনও স্লিপ লাগানো হচ্ছে না।
সূত্রের খবর, কলকাতায় পার্কিং লটগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক কো-অপারেটিভের এই অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ‘দাদাগিরি’ চলছেই। পুরসভা ও কলকাতা পুলিশের যৌথ অভিযান সত্ত্বেও বেআইনি পার্কিং বন্ধ করতে পারেনি তারা। কবে অবস্থা সামাল দিতে কড়া ব্যবস্থা নেবে রাজ্য-প্রশাসন? এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে গাড়ি চালকসহ নিত্যযাত্রীদের অন্তরে।