উত্তরপ্রদেশে আবারও নির্ভয়াকান্ড, হাতরসের ছায়া, নৃশংসভাবে হত্যা গণধর্ষিতাকে

এমনকি রাতারাতি নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে।

January 6, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নির্ভয়াকাণ্ডের স্মৃতি উস্কে ফের ভয়ঙ্কর গণধর্ষণের (Gang Rape)ঘটনা উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। চলন্ত গাড়িতে মধ্যবয়সি এক মহিলাকে গণধর্ষণ করা হল। ধর্ষণের পর নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া হয় পাঁজর ও পায়ের হাড়। রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় মৃত্যু হয় ওই মহিলার। দীর্ঘ গড়মসির পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

সেপ্টেম্বের হাথরস ঘটনার পর ৩ মাস কাটতে না কাটতেই, এই ঘটনায় নতুন করে প্রশ্নের মুখে যোগী সরকার। প্রশ্নের মুখে সে রাজ্যের পুলিশের ভূমিকাও। হাথরস কাণ্ডের সময়ও পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি রাতারাতি নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ (Badaun) জেলার উঘৈতি থানা এলাকায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তার পর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। মধ্যরাতে রাস্তার পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণের পর দুষ্কৃতীরা তাঁকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় বলে জানা গিয়েছে। সেই অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই মহিলাকে। কিন্তু রাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।

গোটা ঘটনায় পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে নির্যাতিতার পরিবার। তাদের দাবি, অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও উঘৈতি থানার স্টেশন অফিসার (এসও) রবেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ ঘটনাস্থলে যাওয়ার তাগিদ পর্যন্ত দেখাননি। বরং যেখান থেকে ওই মহিলাকে উদ্ধার করা হয়, সোমবার দুপুরে কেবলমাত্র একবার সেখানে ঢুঁ মেরে আসে পুলিশ। এমনকি মৃতার ময়নাতদন্ত নিয়েও গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। রবিবার গভীর রাতে মৃত্যু হলেও, সোমবার বিকেলে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বলে দাবি করেছেন নির্যাতিতার পরিবার। একজন মহিলা-সহ ৩ চিকিৎসকের দল ময়নাতদন্তের দায়িত্বে ছিলেন।

কিন্তু মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসায় স্তম্ভিত হয়ে যান সকলে। জানা যায়, ধর্ষণের পর ওই মহিলার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই রক্তক্ষরণ আর বন্ধ করা যায়নি। তার জেরেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়। এমনকি ভারী বস্তু দিয়ে নির্যাতিতার বুকেও আঘাত করা হয়। তাতে ভেঙে যায় তাঁর পাঁজরের হাড়। নির্যাতিতার একটি পা-ও ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার অবস্থা দেখে প্রথমে চন্দৌসিতে তাঁকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। কিন্তু পরে ওই এলাকায় নির্যাতিতাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় মহন্ত বাবা সত্যনারায়ণ, তাঁর সহযোগী বেদরাম এবং গাড়ির চালক জসপালের নাম সামনে এসেছে। পুরোহিত হিসেবে এলাকায় পরিচিত বাবা সত্যনারায়ণ। নির্যাতিতা যে মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন, তিনি সেখানকার পুরোহিত কি না, তা যদিও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু বুধবার সকাল পর্যন্ত অভিযুক্তদের মধ্যে কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen